পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
মৃণালিনী।

 মৃ। “গিরিজায়া আমাকে প্রতারণা করিও না; হেমচন্দ্র কি আরোগ্যলাভ করেন নাই, তাহা হইলে আমাকে স্পষ্ট করিয়া বল। সন্দেহের অপেক্ষা প্রতীতি ভাল।”

 গিরিজায়া এবার সহাস্যে কহিল, “তুমি কেন অনর্থক ব্যস্ত হও। আমি নিশ্চিত বলিতেছি তাঁহার শরীরে কিছুই ক্লেশ নাই। তিনি উঠিয়া বেড়াইতেছেন।”

 মৃণালিনী ক্ষণেক চিন্তা করিয়া কহিলেন, “মনোরমার সহিত তাঁহার কোন কথা বার্ত্তা শুনিলে?”

 গি। “শুনিলাম।”

 মৃ। “কি শুনিলে?”

 গিরিজায়া তখন হেমচন্দ্র বিবরিত কথা সকল কহিলেন। কেবল হেমচন্দ্রের সগোচরে যে মনোরমা নিশা পর্য্যটন করিয়াছেন ও কাণে কাণে কথা বলিয়াছিলেন, এই দুইটা বিষয় গোপন করিলেন। মৃণালিনী জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি হেমচন্দ্রের সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছ?”

 গিরিজায়া কিছু ইতস্ততঃ করিয়া কহিল, “করিয়াছি।”

 মৃ। “তিনি কি কহিলেন?”

 গি। “তোমার কথা জিজ্ঞাসা করিলেন।

 মৃ। “তুমি কি বলিলে?”

 গি। “আমি কহিলাম তুমি ভাল আছ।”

 মৃ। “আমি এখানে আসিয়াছি তাহা বলিয়াছ?”

 গি। “না।”

 মৃ। “গিরিজায়া, তুমি ইতস্ততঃ করিয়া উত্তর দিতেছ। তোমার মুখ শুস্ক। তুমি আমার মুখপানে চাহিতে পারিতেছ না। আমি নিশ্চিত বুঝিতেছি তুমি কোন অমঙ্গল সম্বাদ আমার নিকট গোপন করিতেছ। আমি তোমার কথায় বিশ্বাস