পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
মৃণালিনী।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ।


বিহঙ্গিনী পিঞ্জরে।

 পশুপতি, মনোরমার বুদ্ধিপ্রদীপ জ্বালিবার অনেক যত্ন করিতে লাগিলেন কিন্তু ফলোৎপত্তি কঠিন হইল। পরিশেষে বলিলেন, “মনোরমে, রাত্রি অধিক হইয়াছে। আমি শয়নে যাই।”

 মনোরমা অম্লান বদনে কহিলেন, “যাও।”

 পশুপতি শয়নে গেলেন না। বসিয়া মালা গাঁথা দেখিতে লাগিলেন। আবার উপায়ান্তর স্বরূপ, ভয়সূচক চিন্তায় কার্য্য সিদ্ধি হইবেক ভাবিয়া, মনোরমাকে ভীতা করিবার জন্য পশুপতি কহিলেন, “মনোরমে, যদি ইতিমধ্যে যবন আইসে, তবে তুমি কোথায় যাইবে?”

 মনোরমা মালা হইতে মুখ না তুলিয়া কহিলেন, “বাটীতে থাকিব।”

 পশুপতি কহিলেন, “বাটীতে তোমাকে কে রক্ষা করিবে?”

 মনোরমা পূর্ব্ববৎ অন্যমনে কহিলেন, “জানি না। নিরুপায়।”

 পশুপতি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি আমাকে কি বলিতে মন্দিরে আসিয়াছ?”

 ম। “দেবতা প্রণাম করিতে।”

 পশুপতি বিরক্ত হইলেন। কহিলেন, তোমাকে মিনতি করিতেছি, মনোরমে, এইবার যাহা বলিতেছি, তাহা মনোযোগ দিয়া শুন—তুমি আজিও বল, আমাকে বিবাহ করিবে কি না?”

 মনোরমার মালা সম্পন্ন হইয়াছিল—তিনি তাহা কৃষ্ণ মার্জ্জা