হেমচন্দ্র কহিলেন, “তোমার কেহ আছে? তাহাকে তোমার নিকট রাখিয়া যাইব?”
ব্রাহ্মণ কহিল, “আর কে—কে আছে? কেবল—কেবল সেই রাক্ষসী। সেই রাক্ষসী—তাহাকে—বলিও—বলিও আমার অপ—অপরাধের প্রতিশোধ হইয়াছে।”
হেমচন্দ্র। “কে সে? কাহাকে বলিব?”
ব্রাহ্মণ কহিতে লাগিল—“কে সে? সে পিশাচী? পিশাচী চেন না? পিশাচী মৃণালিনী—মৃণালিনী! মৃণালিনী—পিশাচী।”
ব্রাহ্মণ অধিকতর আর্ত্তনাদ করিতে লাগিল।—হেমচন্দ্র মৃণালিনীর নাম শুনিয়া চমকিত হইলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন, “মৃণালিনী তোমার কে হয়?”
ব্রাহ্মণ কহিলেন “মৃণালিনী কে হয়? কেহ না—আমার যম।”
হেমচন্দ্র। “মৃণালিনী তোমার কি করিয়াছে?”
ব্রাহ্মণ। “কি করিয়াছে?—কিছু না—আমি তার—দুর্দ্দশা করিয়াছি, তাহার প্রতিশোধ হইল—”
হেমচন্দ্র। “কি দুর্দ্দশা করিয়াছ?”
ব্রাহ্মণ। “আর কথা কহিতে পারি না, জল দাও।”
হেমচন্দ্র পুনর্ব্বার তাহাকে জলপান করাইলেন। ব্রাহ্মণ জলপান করিয়া স্থির হইলে হেমচন্দ্র তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন “তোমার নাম কি?”
ব্রা। “ব্যোমকেশ।”
হেমচন্দ্রের চক্ষুঃ হইতে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নির্গত হইল। দন্তে অপর দংশন করিলেন। করস্থ শূল দৃঢ়তর মুষ্টিবদ্ধ করিয়া ধরিলেন। আবার তখনই শান্ত হইয়া কহিলেন,
“তোমার নিবাস কোথা?”