পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৯

নবম পরিচ্ছেদ।


স্বপ্ন।

 গিরিজায়া কহিল, “গৃহে চল।” মৃণালিনী বলিলেন, “নগরে এ কিসের গোলযোগ?” তখন যবনসেনা নগর মন্থন করিতেছিল।

 তুমুল কোলাহল শুনিয়া উভয়ের শঙ্কা হইল। গিরিজায়। বলিলেন, “চল এই বেলা সতর্ক হইয়া যাই।” কিন্তু দুই জন রাজপথের নিকট পর্য্যন্ত গিয়া দেখিলেন গমনের কোন উপায়ই নাই। অগত্যা প্রত্যাগমন করিয়া সরোবরে সোপানে বসিলেন। গিরিজায়া বলিলেন, “যদি এখানে উহারা আইসে?”

 মৃণালিনী নীরবে রহিলেন। গিরিজায়া আপনিই বলিলেন “বনের ছায়া মধ্যে এমত লুকাইব—কেহ দেখিতে পাইবে না।”

 উভয়ে আসিয়া সোপানোপরি উপবেশন করিয়া রহিলেন।

 মৃণালিনী ম্লান বদনে গিরিজায়াকে কহিলেন “গিরিজায়ে, বুঝি আমার যথার্থই সর্ব্বনাশ উপস্থিত হইল।”

 গি। “সে কি?”

 মৃ। “এই এক অশ্বারোহী গমন করিল; ইনি হেমচন্দ্র। সখি—নগরে ঘোর যুদ্ধ হইতেছে; যদি নিঃসহায়ে প্রভু সে যুদ্ধে গিয়া থাকেন—না জানি কি বিপদে পড়িবেন।”

 গিরিজায়া কোন উত্তর করিতে পারিল না। তাহার নিদ্রা আসিতেছিল। কিয়ৎক্ষণ পরে মৃণালিনী দেখিলেন যে গিরিজায়া ঘুমাইতেছে।

 মৃণালিনীও, একে আহারনিদ্রাভাবে দুর্ব্বলা—তাহাতে সমস্ত