পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
মৃণালিনী।

 সঙ্গে কামরূপ যাইতে অনুরোধ করি না। আমি অগ্রে যাইতেছি। যখন সময় বুঝিবেন তখন তোমার নিকট কামরূপাধিপতি দূত প্রেরণ করিবেন। এক্ষণে তুমি বধূকে লইয়া মথুরায় গিয়া বাস কর—অথবা অন্য অভিপ্রেত স্থানে বাস করিও।”

 এইরূপ কথোপকথনের পর হেমচন্দ্র মাধবাচার্য্যের নিকট বিদায় হইলেন। মাধবাচার্য্য আশীর্ব্বাদ, আলিঙ্গন করিয়া সাশ্রুলোচনে তাঁহাকে বিদায় করিলেন।


ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ।


মহম্মদআলির প্রায়শ্চিত্ত।

 যে রাত্রে রাজধানী যবনসেনা বিপ্লবে পীড়িত হইতেছিল, সেই রাত্রে পশুপতি একাকী কারাগারে অবরুদ্ধ ছিলেন। নিশাবশেষে সেনাবিপ্লব সমাপ্ত হইয়া গেল। মহম্মদআলি তখন তাঁহার সম্ভাষণে আসিলেন। পশুপতি কহিলেন,

 “যবন!—প্রিয় সম্ভাষণে আর আবশ্যক করে না। একবার তোমারই প্রিয়সম্ভাষণে বিশ্বাস করিয়া এই অবস্থাপন্ন হইয়াছি। বিধর্ম্মী যবনকে বিশ্বাস করার যে ফল তাহা প্রাপ্ত হইয়াছি। এক্ষণে আমি মৃত্যু শ্রেয়ঃকল্পনা করিয়া অন্য ভরসা ত্যাগ করিয়াছি। তোমাদিগের কোন প্রিয়সম্ভাষণ শুনিব না।”

 মহম্মদআলি কহিল। “আমি প্রভুর আজ্ঞা প্রতিপালন করি। প্রভুর আজ্ঞা প্রতিপালন করিতে আসিয়াছি। আপনাকে যবন বেশ পরিধান করিতে হইবে।”