হেমচন্দ্র কহিলেন, “আপনি যাহা বলিবেন তাহাই স্বীকার করিব। মৃণালিনী কোথায় আছে আজ্ঞা করুন।”
মা। “তুমি সত্যবাদী—আমার আজ্ঞাপালন করিতে স্বীকার করিলে। ইহাতেই আমি সন্তুষ্ট হইলাম। গৌড়নগরে এক শিষ্যের বাটীতে মৃণালিনীকে রাখিয়াছি। তোমাকেও সেই প্রদেশে যাইতে হইবে, কিন্তু তুমি তাহার সাক্ষাৎ পাইবে না। শিষ্যের প্রতি আমার বিশেষ আজ্ঞা আছে যে যতদিন মৃণালিনী তাঁহার গৃহে থাকিবে ততদিন সে পুরুষান্তরের সাক্ষাৎ না পায়।”
হে। “সাক্ষাৎ না পাই যাহা বলিলেন ইহাতেই আমি চরিতার্থ হইলাম। এক্ষণে কি কার্য্য করিতে হইবে অনুমতি করুন।”
মা। “তুমি দিল্লী গিয়া যবনের মন্ত্রণা কি জানিয়া আসিআছ?”
হে। “যবনেরা বঙ্গ বিজয়ের উদ্যোগ করিতেছে। অতি ত্বরায় বখ্তিয়ার খিলিজি সেনা লইয়া তদ্দেশাভিমুখে যাত্রা করিবে।”
মাধবাচার্য্যের মুখ হর্ষপ্রফুল্ল হইল। তিনি কহিলেন, “এত দিনে বিধাতা বুঝি এ দেশের প্রতি সদয় হইলেন।”
হেমচন্দ্র একতানমনে মাধবাচার্য্যের প্রতি চাহিয়া তাঁহার কথার প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। মাধবাচার্য্য বলিতে লাগিলেন,
“কয় মাস পর্য্যন্ত আমি কেবল গণনায় নিযুক্ত আছি। গণনার যাহা ভবিষ্যৎ বলিয়া প্রতিপন্ন হইয়াছে তাহা ফলিবার উপক্রম হইতেছে।”
হেম। “কি প্রকার?”