বিলক্ষণ সৌষ্ঠব ছিল। তদীয় অন্তঃপুর মধ্যে যথায় দুইটী তরুণী কক্ষ প্রাচীরে আলেখ্য লিখিতেছিলেন, তথায় পাঠকমহাশয়কে দাঁড়াইতে হইবে। উভয় রমণী আত্মকর্ম্মে সবিশেষ মনোভিনিবেশ করিয়াছিলেন, কিন্তু তন্নিবন্ধন পরস্পরের সহিত কথোপকথনের কোন বিঘ্ন জন্মিতেছিল না। সেই কথোপকথনের মধ্য ভাগ হইতে পাঠক মহাশয়কে শুনাইতে আরম্ভ করিব।
এক যুবতী অপরকে কহিলেন, “কেন, মৃণালিনি, কথার উত্তর দিস্ না কেন? আমি সেই রাজ পুত্রটীর কথা শুনিতে ভাল বাসি।”
“সই মণিমালিনি! তোমার সুখের কথা বল, আমি আনন্দে শুনিব।”
মণিমালিনী কহিল, “আমার সুখের কথা শুনিতে শুনিতে আমিই জ্বালাতন হইয়াছি, তোমাকে কি শুনাইব?”
মৃ। “তুমি শোন কার কাছে—তোমার স্বামীর কাছে?”
মণি। “নহিলে আর কারও কাছে বড় শুনিতে পাই না। এই পদ্মটী কেমন আঁকিলাম দেখ দেখি?”
মৃ। “ভাল হইয়াও হয় নাই। জল হইতে পদ্ম অনেক উর্দ্ধে আছে, কিন্তু সরোবরে সেরূপ থাকে না; পদ্মের বোঁটা জলে লাগিয়া থাকে, চিত্রেও সেইরূপ হইবে। আর কয়েকটী পদ্মপত্র আঁক; নহিলে পদ্মের শোভা স্পষ্ট হয় না। আরও, পার যদি উহার নিকট একটী হংস আঁকিয়া দাও।”
মণি। “হংস এখানে কি করিবে?”
মৃ। “তোমার স্বামীর ন্যায় পদ্মের কাছে সুখের কথা কহিবে।”
মণি। (হাঁসিয়া) “দুই জনেই সুকণ্ঠ বটে। কিন্তু আমি