লিখিব না। আমি সুখের কথা শুনিয়া শুনিয়া জ্বালাতন হইয়াছি।”
মৃ। “তবে একটী খঞ্জন আঁক।”
ম। “খঞ্জন আঁকিব না। খঞ্জন পাখা বাহির করিয়া উড়িয়া যাইবে। এত মৃণালিনী নহে, যে স্নেহ-শিকলে বাঁধিয়া রাখিব।”
মৃ। “খঞ্জন যদি এমনই দুশ্চরিত্র হয়, তবে মৃণালিনীকে যেমন পিঞ্জরে পূরিয়াছ খঞ্জনকেও সেইরূপ করিও।”
ম। “আমরা মৃণালিনীকে পিঞ্জরে পূরি নাই—সে আপনি আসিয়া পিঞ্জরে প্রবেশ করিয়াছে।”
মৃ। “সে মাধবাচার্য্যের গুণ।”
ম। “সখি, তুমি কত বার বলিয়াছ যে মাধবাচার্য্যের সেই নিষ্ঠুর কাজের কথা সবিশেষ বলিবে। কিন্তু কই, আজিও কেন তুমি মাধবাচার্য্যের কথায় পিতৃগৃহ ত্যাগ করিয়া আসিলে।”
মৃ। মাধবাচার্য্যের কথায় আসি নাই। মাধবাচার্য্যকে আমি চিনিতাম না। আমি ইচ্ছা পূর্ব্বকও এখানে আসি নাই। একদিন সন্ধ্যার পর আমার দাসী আমাকে এই অঙ্গুরীয় দিল। এবং বলিল যে যিনি এই অঙ্গুরীয় দিয়াছেন তিনি উদ্যানে অপেক্ষা করিতেছেন। আমি দেখিলাম যে, উহা হেমচন্দ্রের সঙ্কেতাঙ্গুরীয়। তাঁহার সাক্ষাতের অভিলাষ থাকিলে তিনি এই অঙ্গুরীয় দ্বারা সঙ্কেত করিতেন। আমাদিগের বাটীর পশ্চাতেই উপবন ছিল। যমুনা হইতে শীতল বায়ু সেই উদ্যানকে স্নিগ্ধ কুরিত। তথায় তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ হইত।”
মণিমালিনী কহিলেন, “ঐ কথাটী মনে পড়িলেও আমার বড় অসুখ হয়। তুমি কুমারী হইয়া কি প্রকারে পুরুষের সহিত