“রাজহংস দেখি এক নয়নরঞ্জন।
চরণে বেড়িয়া তারে, করিল বন্ধন॥
বলে হংসরাজ কোথা করিবে গমন।
হৃদয় কমলে মোর, তোমার আসন॥
আসিয়া বসিল হংস হৃদয় কমলে।
কাঁপিল কণ্টক সহ মৃণালিনী জলে॥
হেন কালে কাল মেঘ, উদিল আকাশে।
উড়িল মরালরাজ, মানস বিলাসে॥
ভাঙ্গিল হৃদয়পদ্ম, তার বেগভরে।
ডুবিয়া অতল জলে, মৃণালিনী মরে॥”
কেমন গিরিজায়া শিখিতে পারিবি?
গিরি। “তা পারিব। চক্ষের জল টুকু শুদ্ধ কি শিখিব?”
মৃ। “না। এ ব্যবসায় আমার লাভের মধ্যে ঐ টুকু।”
মৃণালিনী গিরিজায়াকে এই কবিতা গুলিন অভ্যাস করাইতে ছিলেন। এমত সময়ে মণিমালিনীর পদধ্বনি শুনিতে পাইলেন। মণিমালিনী তাঁহার স্নেহশালিনী সখী সকলেই জানিয়াছেন। তথাপি মণিমালিনী পিতৃপ্রতিজ্ঞাভঙ্গের সহায়তা করিবে এরূপ তাঁহার বিশ্বাস জন্মিল না। অতএব তিনি এ সকল কথা সখীর নিকট গোপনে যত্নবতী হইয়া গিরিজায়াকে কহিলেন; “আজি আর কাজ নাই। বণিকের সহিত সাক্ষাৎ করিও। তোমার বোঝা কালি আবার আনিও। যদি গ্রহণযোগ্য কোন সামগ্রী থাকে, তবে তাহা আমি ক্রয় করিব।”
গিরিজায় বিদায় হইল। মৃণালিনী যে তাহাকে পারিতোষিক দিবার অভিপ্রায় করিয়াছিলেন তাহা ভুলিয়া গিয়াছিলেন।
গিরিজায়া কতিপয় পদ গমন করিলে মণিমালিনী একটী রৌপ্য মুদ্রা আনিয়া মৃণালিনীর হস্তে অর্পণ করিলেন। তখন