পিতা কি বলিতে না জানি কি বলিয়াছেন, সখি, ফের। রাগ করিও না।”
মণিমালিনী মৃণালিনীকে ফিরাইতে পারিলেন না। পর্ব্বতসানুবাহী শিলাখণ্ডের ন্যায় অভিমানিনী সাধ্বী চলিয়া গেলেন। তখন অতি ব্যস্ত মণিমালিনী পিতৃসন্নিধানে আসিলেন। মৃণালিনীও গৃহের বাহিরে আসিলেন।
বাহিরে আসিয়া দেখিলেন, পূর্ব্ব সঙ্কেত স্থানে গিরিজায়া দাঁড়াইয়া আছে। মৃণালিনী তাহাকে দেখিয়া কহিলেন,
“তুমি এখনও দাঁড়াইয়া কেন?”
গি। “আমি যে তােমাকে পলাইতে বলিয়া আসিলাম। তুমি আইস না আইস—দেখিয়া যাইবার জন্য দাঁড়াইয়া আছি।”
মৃ। “তুমি কি ব্রাহ্মণকে দংশন করিয়াছিলে?”
গি। “নহিলে কে?”
মৃ। “নহিলে কে? কিন্তু তুমি যে গান করিতে করিতে চলিয়া গেলে শুনিলাম?”
গি। “তার পর তােমাদের কথা বার্ত্তার শব্দ শুনিয়া ফিরিয়া দেখিতে আসিয়াছিলাম। পরে অবস্থামতে কার্য্য করিলাম। এখন তুমি কোথা যাইবে?”
মৃ। “তােমার গৃহ আছে?”
গি। “আছে। পাতার কূটীর।”
মৃ। “সেখানে আর কে থাকে?”
গি। “এক বৃদ্ধা মাত্র। তাহাকে আজি বলি।”
মৃ। “চল তােমার গৃহে যাব।”
গি। “চল। তাই ভাবিতেছিলাম।” এই বলিয়া দুই জনে চলিলেন। যাইতে যাইতে গিরিজায়া কহিল, “কিন্তু সে ত কুটীর। সেখানে কয়দিন থাকিবে?”