রোস্তম পাহাড় বিদীর্ণ করিয়াছিল, তবে বখ্তিয়ার যুদ্ধে একটা হাতী মারিতে পারিবে না?”
তৃতীয় ব্যক্তি কহিল, “তথাপি উহার ঐ ত বানরের ন্যায় শরীর, এ শরীর লইয়া মত্ত হস্তীর সঙ্গে যুদ্ধে সাহস করা, পাগলের কাজ।”
প্রথম প্রস্তাবকর্ত্তা কহিল “বোধ হয় খিলিজিপুত্র এক্ষণে তাহা বুঝিয়াছে; সেই জন্য এখনও অগ্রসর হইতেছে না।”
আর এক ব্যক্তি কহিল, “আরে, বুঝিতেছ না, বখ্তিয়ারের মৃত্যুর জন্য পাঁচ জনে ষড়্যন্ত্র করিয়া এই এক উপায় করিয়াছে। বেহার জয় করিয়া বখ্তিয়ারের বড় দম্ভ হইয়াছে। আর রাজপ্রসাদ সকলই তিনি একক ভোগ করিতেছেন। এই জন্য পাঁচ জনে বলিল যে বখ্তিয়ার অমানুষ বলবান্, চাহি কি মত্ত হাতী একা মারিতে পারে। কুতুবউদ্দীন তাহা দেখিতে চাহিলেন। বখ্তিয়ার দম্ভে লঘু হইতে পারিলেন না, সুতরাং অগত্যা স্বীকার করিয়াছেন।”
এই বলিতে বলিতে রঙ্গাঙ্গন মধ্যে তুমুল কোলাহল ধ্বনি সংঘোষিত হইল। দ্রষ্টৃবর্গ সভয় চক্ষে দেখিলেন, পর্ব্বতাকার, শ্রাবণের দিগন্তব্যাপী জলদাকার, এক মত্ত মাতঙ্গ, মাহুত কর্ত্তৃক আনীত হইয়া, রঙ্গাঙ্গন মধ্যে দুলিতে দুলিতে প্রবেশ করিল। তাহার মুহুর্মুহুঃ শুণ্ডাস্ফালন, মুহুর্মুহুঃ বিপুল কর্ণতাড়ন, এবং বিশাল বঙ্কিম দন্তদ্বয়ের অমল-শ্বেত স্থির শোভা দেখিয়া দর্শকেরা সভয়ে পশ্চাদ্গত হইয়া দাঁড়াইলেন। পশ্চাদপসারী দর্শকদিগের বস্ত্র মর্ম্মরে, ভয়সূচক বাক্যে, এবং পদধ্বনিতে কিয়ৎক্ষণ রঙ্গাঙ্গন মধ্যে অস্ফুট কলরব হইতে লাগিল। অল্পক্ষণ মধ্যে সে কলরব নিবৃত্ত হইল। কৌতূহলের আতিশয্যে সেই জনাকীর্ণ স্থল একেবারে শব্দহীন হইল। সকলে রুদ্ধনিশ্বাসে বখ্-
ক২