ঠাকুরাণী, তুমি তাঁহাকে দেখিয়া ত জীবন ধারণ করিবে; আমি তোমার দাসী হইয়াছি আমার ত তাহাতে পেট ভরিবে না, আমি কি খেয়ে বাঁচিব?”
মৃ। “আমি দুই একটা শিল্পকর্ম জানি। মালা গাঁথিতে জানি, চিত্র করিতে জানি, বস্ত্রে কারুকার্য্য করিতে জানি। তুমি বিপণে আমার শিল্পরচনা বিক্রয় করিয়া দিবে?”
গিরি। “আর আমি ঘরে ঘরে গীত গাইব। “মৃণাল অধমে” গাইব কি?”
মৃণালিনী অর্দ্ধসহাস্য, অর্দ্ধসকোপ দৃষ্টিতে গিরিজায়ার প্রতি কটাক্ষ করিলেন।
গিরিজায়া কহিলেন, “অমন করিয়া চাহিলে আমি গীত গাইব।” এই বলিয়া গাইল।
সাধের তরণী আমার কে দিল তরঙ্গে।[১]
কে আছে কাণ্ডারী হেন, কে যাইবে সঙ্গে॥
মৃণালিনী কহিল “যদি এত ভয় তবে একা এলে কেন?”
গিরিজায়া কহিলেন “আগে কি জানি।” বলিয়া গাইতে লাগিল।
“ভাসল তরি সকাল বেলা, ভাবিলাম এ জল খেলা
মধুর বহিবে বায়ু ভেসে যাব রঙ্গে।
গগনে গরজে ঘন, বহে খর সমীরণ,
কূল ত্যজি এলাম কেন? মরিতে আতঙ্গে॥”
মৃণালিনী কহিল, “কুলে ফিরিয়া যাওনা কেন?”
গিরিজায়া গাইতে লাগিল।
“মনে করি কূলে ফিরি, বাহি তরি ধীরি ধীরি,
কূলেতে কণ্টক তরু, বেষ্টিত ভূজঙ্গে।”
- ↑ রাগিণী—সিন্ধু ভৈরবী—তাল আড়া