য়াছে। প্রেত বিবেচনা করিয়া হেমচন্দ্র নিঃশব্দে চলিয়া যাইতে ছিলেন। কিন্তু মনে ভাবিলেন, যদি মনুষ্য হয়? এত রাত্রে কে এ স্থানে? সে ত যবনকে দেখিলে দেখিয়া থাকিতে পারে? এই সন্দেহে হেমচন্দ্র ফিরিলেন। সাহসে ভর করিয়া বাপীতীরারোহণ করিলেন, সোপানমার্গে ধীরে ধীরে অবতরণ করিতে লাগিলেন। প্রেতিনী তাঁহার আগমন জানিতে পারিযাও সরিল না। পূর্ব্ববৎ রহিল। হেমচন্দ্র তাহার নিকটে আসিলেন। তখন সে উঠিয়া দাঁড়াইল; হেমচন্দ্রের দিকে ফিরিল; হস্ত দ্বারা মুখাবরণকারী কেশদাম অপসৃত করিল। হেমচন্দ্র তাহার মুখ দেখিলেন। সে প্রেতিনী নহে, কিন্তু প্রেতিনী হইলে হেমচন্দ্র অধিকতর বিস্ময়াপন্ন হইতেন না। কহিলেন, “কে মনোরমে! তুমি এখানে?” মনোরমা কহিল, “আমি এখানে অনেক বার আসি—কিন্তু তুমি এখানে কেন?”
হেম। “আমার কর্ম্ম আছে।”
মনো। “এ রাত্রে কি কর্ম্ম?”
হেম। “পশ্চাৎ বলিব, তুমি এরাত্রে এখানে কেন?”
মনো। “তোমার এ বেশ কেন? হাতে শূল; কাঁকালে তরবারি; তরবারে এ কি জ্বলিতেছে? একি হীরা? মাথায় এ কি? ইহাতে যে ঝক্মক্ করিয়া জ্বলিতেছে, এই বা কি? এও কি হীরা? এত হীরা পেলে কোথা?”
হেম। “আমার ছিল।”
মনো। “এ রাত্রে এত হীরা পরিয়া কোথায় যাইতেছ? চোরে যে কাড়িয়া লইবে?”
হেম। “আমার নিকট হইতে চোরে কাড়িতে পারে না।”
মনো। “ত রাত্রে এত অলঙ্কারে প্রয়োজন কি? তুমি কি বিবাহ করিতে যাইতেছ।”