পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
মৃণালিনী।

 ম। “যবনের বেশ।”

 হেমচন্দ্র অত্যন্ত বিস্মিত হইলেন; বলিলেন, “সে কি? তুমি যবন চিনিলে কি প্রকারে?”

 ম। “আমি পূর্ব্বে যবন দেখিয়াছি।”

 হে। “সে কি? কোথায় দেখিলে?”

 ম। “যে খানে দেখি—তুমি কি সেই যবনের অনুসরণ করিবে?”

 হে। “করিব—সে কোন্ পথে গেল?”

 ম। “কেন?”

 হে। “তাহাকে বধ করিব?

 ম। “নরহত্যা করিয়া কি হইবে?”

 হে। “যবন আমার পরম শত্রু।”

 ম। “তবে একটী যবন মারিয়া কি তৃপ্তিলাভ করিবে?”

 হে। “আমি যত যবন দেখিতে পাইব তত মারিব।”

 ম। “পারিবে?”

 হে। “পারিব।”

 মনোরমা বলিলেন, “তবে সাবধানে আমার সঙ্গে আইস।”

 হেমচন্দ্র ইতস্ততঃ করিতে লাগিলেন। যবন যুদ্ধে এই বালিকা পথপ্রদর্শিণী।

 মনোরমা তাঁহার মানসিক ভাব বুঝিলেন, বলিলেন “আমাকে বালিকা ভাবিয়া অবিশ্বাস করিতেছ?”

 হেমচন্দ্র মনোরমার প্রতি চাহিয়া দেখিলেন। বিস্ময়াপন্ন হইয়া ভাবিলেন—মনোরমা কি মানুষী?