পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পশুপতি।
৭৫

ফারসী, আর অবশিষ্ট চতুর্থ ভাগ যেরূপ সংস্কৃত তাহা ভারতবর্ষে কখন ব্যবহৃত হয় নাই। তাহা মহম্মদআলিরই সৃষ্ট সংস্কৃত। পশুপতি বহুকষ্টে তাহার অর্থ বোধ করিলেন। পাঠক মহাশয়ের সে কষ্টভোগের প্রয়োজন নাই, আমরা তাঁহার সুবোধার্থ সে নূতন সংস্কৃতের অনুবাদ করিয়া দিতেছি।

 যবন কহিল, “খিলিজি সাহেবের অভিপ্রায় আপনি অবগত আছেন। বিনা যুদ্ধে, বঙ্গবিজয় করিবেন তাঁহার ইচ্ছা হইয়াছে। কি হইলে আপনি এ রাজ্য তাঁহার হস্তে সমর্পণ করিবেন?”

 পশুপতি কহিলেন, “আমি এ রাজ্য তাঁহার হস্তে সমর্পণ করিব কি না তাহা অনিশ্চিত। স্বদেশবৈরিতা মহাপাপ। আমি এ কর্ম্ম কেন করিব?”

 য। “উত্তম। আমি চলিলাম। কিন্তু আপনি তবে কেন খিলিজির নিকট দূত প্রেরণ করিয়াছিলেন?”

 প। “তাঁহার যুদ্ধের সাধ কতদূর পর্য্যন্ত তাহা জানিবার জন্য।”

 য। “তাই আমি আপনাকে জানাইয়া যাই। যুদ্ধেই তাঁহার আনন্দ।”

 প। “কি মনুষ্য যুদ্ধে, কি পশুযুদ্ধে? হস্তিযুদ্ধে কেমন আনন্দ?

 মহম্মদ আলি সকোপে কহিলেন “বঙ্গে যুদ্ধাভিপ্রায়ে আসা পশু যুদ্ধেই আসা। বুঝিলাম ব্যঙ্গ করিবার জন্যই আপনি সেনাপতিকে লোক পাঠাইতে বলিয়াছিলেন। আমরা যুদ্ধ জানি, ব্যঙ্গ জানি না। যাহা জানি তাহা করিব।”

 এই বলিয়া মহম্মদ আলি গমনেদ্যোগী হইল। পশুপতি কহিলেন,