“ক্ষণেক অপেক্ষা করুন। আর কিছু শুনিয়া যান। আমি যবন হস্তে এ রাজ্য সমর্পণ করিতে অসম্মত নহি। অক্ষমও নহি। আমিই বঙ্গের রাজা, সেন রাজা নাম মাত্র। কিন্তু সমুচিত মূল্য না পাইলে আপন রাজ্য কেন আপনাদিগকে দিব?”
মহম্মদ আলি কহিলেন, “আপনি কি চাহেন?”
প। “খিলিজি কি দিবেন?”
ম। “আপনার যাহা আছে, তাহা সকলই থাকিবে— আপনার জীবন, ঐশ্বর্য্য, পদ সকলই থাকিবে। এই মাত্র।”
প। “তবে আমি পাইলাম কি? এ সকলই ত আমার আছে—কি লোভে আমি এ গুরুতর পাপানুষ্ঠান করিব?”
ম। “আমাদের আনুকূল্য না করিলে কিছুই থাকিবেক না; যুদ্ধ করিলে, আপনার ঐশ্বর্য, পদ, জীবন পর্যন্ত অপহৃত হইবে।”
প। “তাহা যুদ্ধ শেষ না হইলে বলা যায় না। আমরা যুদ্ধ করিতে একেবারে অনিচ্ছুক বিবেচনা করিবেন না। বিশেষ মগধে বিদ্রোহের উদ্যোগ হইতেছে তাহাও অবগত আছি। তন্নিবারণজন্য এক্ষণে খিলিজি ব্যস্ত, বঙ্গজয় চেষ্টা আপাততঃ কিছু দিন তাঁহাকে ত্যাগ করিতে হইবে তাহাও অবগত আছি। আমার প্রার্থিত পুরস্কার না দেন, না দিবেন, কিন্তু যুদ্ধ করাই যদি স্থির হয়, তবে আমাদিগের এই উত্তম সময়। যখন বেহারে বিদ্রোহিসেনা সজ্জিত হইবে, গৌড়েশ্বরের সেনাও তথায় গিয়া তাহাদিগের সহায়তা করিবে।”
ম। “ক্ষতি কি? পিপীলিকা দংশনের উপর মক্ষিকা দংশন করিলে হস্তী মরে না। কিন্তু আপনার প্রার্থিত পুরস্কার কি, তাহা শুনিয়া যাইতে বাসনা করি।”