শান্ত। “তাহা হইলে কে আসিয়া আপনাকে সম্বাদ দিত?”
পশুপতি হাসিয়া কহিলেন, “তুমিই আসিতে।”
শান্তশীল প্রণাম করিয়া কহিল, “আমিই সম্বাদ দিতে আসিয়াছি।”
পশুপতি আনন্দিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি প্রকারে গেলে?”
শান্ত। “প্রথমে উষ্ণীষ, শস্ত্র ও তদুপযোগী বসন সংগ্রহ করিলাম। তাহা লুক্কায়িত করিয়া বাঁধিয়া পৃষ্ঠে সংস্থাপিত করিলাম। তৎপরে কাঠুরিয়ার বেশ ধরিয়া কাঠুরিয়াদিগের সঙ্গে বনমার্গে প্রবেশ লাভ করিলাম। পরে যখন যবনেরা কাঠুরিয়াদিগের দেখিতে পাইয়া তাহাদিগের বধে প্রবৃত্ত হইল— তখন আমি অপসৃত হইয়া বৃক্ষান্তরালে বেশ পরিবর্ত্ত করিলাম। পরে মুসলমান হইয়া যবনশিবিরে সর্ব্বত্র পর্য্যটন করিলাম।”
পশু। “প্রশংসনীয় বটে। যবন সৈন্য কত দেখিলে?”
শান্ত। “সে বৃহৎ অরণ্যে যত ধরে। বোধ হয় বিংশতি সহস্র হইবে।”
পশুপতি ভ্রূ কুঞ্চিত করিয়া কিয়ৎক্ষণ স্তব্ধ হইয়া রহিলেন। পরে কহিলেন “তাহাদিগের কথাবার্ত্তা কি শুনিলে?”
শান্ত। “বিস্তর শুনিলাম—কিন্তু তাহার কিছুই আপনার নিকট নিবেদন করিতে পারিলাম না।”
পশু। “কেন?”
শান্ত। “যাবনিক ভাষায় পণ্ডিত নহি।” পশুপতি হাস্য করিলেন। শান্তশীল তখন কহিলেন, “মহম্মদ আলি এখানে যে আসিয়াছিলেন, তাহাতে বিপদ্ আশঙ্কা করিতেছি।”
পশুপতি চমকিত হইয়া কহিলেন, “কেন?”