যদি ভাল না বাসিলে —তবে আমি কেন তোমার পত্নীত্বশৃঙ্খলে বদ্ধ হইব?”
প। “এ কথাকে কেন মনে করিতেছ? অগ্রে তুমি—পরে রাজ্য। আমার চিরকাল এইরূপ থাকিবে।”
ম। “রাজা হইয়া যদি তাহা কর, রাজ্য অপেক্ষা প্রণয়ে যদি অধিক মনোভিনিবেশ কর তবে তুমি রাজ্য করিতে পারিবে না। তুমি রাজ্যচ্যুত হইবে। বিলাসানুরাগী রাজার রাজ্য থাকে না।”
পশুপতি প্রশংসমান চক্ষে মনোরমার মুখপ্রতি চাহিয়া রহিলেন। কহিলেন, “যাহার বামে এমন সরস্বতী, তাহার আশঙ্কা কি? না হয় তাহাই হউক। তোমার জন্য রাজ্য ত্যাগ করিব।”
ম। “তবে রাজ্য গ্রহণ করিতেছ কেন? ত্যাগার্থ গ্রহণে ফল কি?”
প। “তোমার পাণিগ্রহণ।”
ম। “সে আশা ত্যাগ কর। তুমি রাজ্যলাভ করিলে আমি কখন তোমার পত্নী হইব না।”
প। “কেন, মনোরমে! আমি কি অপরাধ করিলাম?”
ম। “তুমি বিশ্বাসঘাতক—আমি বিশ্বাসঘাতককে কি প্রকারে ভক্তি করিব? কি প্রকারে বিশ্বাসঘাতককে ভাল বাসিব।”
প। “কেন আমি কিসে বিশ্বাসঘাতক হইলাম?”
ম। “তোমার প্রতিপালক প্রভুকে রাজ্যচ্যুত করিবার কল্পনা করিতেছ; শরণাগত রাজপুত্রকে বধের কল্পনা করিতেছ; ইহা কি বিশ্বাসঘাতকের কর্ম্ম নয়? যে প্রভুর নিকট বিশ্বাস নষ্ট করিল, অতিথির নিকট বিশ্বাস নষ্ট করিল সে পত্নীর নিকট অবিশ্বাসী না হইবে কেন?”