কিন্তু কন্যা একটি বৈ হয় নাই। পুত্রগণ বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে সমগ্র ভারতবর্ষ সমান অংশে বিভক্ত করিয়া তিনি এক এক জনকে এক এক অংশের রাজত্ব প্রদান করেন এবং কন্যাকেও লালনপালন করিয়া এক রাজ্যের অধিশ্বরী করিয়া যান। তিনি বহুসংখ্যক নগর প্রতিষ্ঠা করেন, তন্মধ্যে পাটলিপুত্র (Palibothra) সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত ও বৃহৎ। তিনি এই নগরে ঐশ্বর্য্যপূর্ণ সৌধমালা নির্মাণ করেন ও বিপুল জনমণ্ডলী স্থাপিত করেন। তিনি বড় বড় পরিখা খনন করিয়া নগরটি সুরক্ষিত করেন। নদীজলে পরিখাগুলি নিয়ত পূর্ণ থাকিত। এই সকল কারণে হীরাক্লীস মর্ত্যধাম হইতে প্রস্থান করিলে অমরোচিত সম্মান লাভ করেন। তাঁহার বংশধরগণ অনেকপুরুষ রাজত্ব করেন। তাঁহারা অনেক স্মরণীয় কর্ম সম্পাদন করিয়া কীর্তিলাভ করেন, কিন্তু কখনও ভারতবর্ষের বাহিরে যুদ্ধযাত্রা করেন নাই কিংবা বিদেশে কোনও উপনিবেশ স্থাপন করেন নাই। অবশেষে বহুযুগ পরে অধিকাংশ নগরে সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়—যদিও সেকেন্দর সাহার ভারতাক্রমণ পর্যন্ত কোনও কোনও নগরে রাজতন্ত্র বর্তমান ছিল। ভারতবাসীদিগের মধ্যে যে সকল বিধি বর্তমান আছে তন্মধ্যে প্রাচীন ঋষিগণ কর্তৃক নির্দিষ্ট একটি বিধি সর্বাপেক্ষা প্রশংসাযোগ্য। এদেশের একটি বিধান এই যে কেহই কখন ক্রীতদাস বলিয়া পরিগণিত হইবে না; সকলেই স্বাধীন, সুতরাং সকলেরই স্বাধীনতায় অধিকার তুল্য সম্মান প্রাপ্ত হইবে। কারণ যাহারা গর্বভরে অপরের সহিত যথেচ্ছ ব্যবহার করে না কিংবা অপরের পদলেহন করে না তাহারাই সেই প্রকার জীবন যাপনের অধিকারী, যাহা সম্পূর্ণরূপে, সমুদায় অবস্থার উপযোগী। যে বিধান সকলে সমভাবে পালন করিতে বাধ্য, কিন্তু অসমান ধনবিভাগের অনুকূল, তাহাই সর্বোৎকৃষ্ট।
ভারতবর্ষের সমগ্র অধিবাসিবৃন্দ সাত জাতিতে বিভক্ত। তন্মধ্যে