পাতা:মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ - রজনীকান্ত গুহ (১৯৪৪).pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ

সেকেন্দর কৌকেসসের পরপারে গমন করিয়াছিলেন। ভারতবর্ষের পশ্চিম সীমায় বরাবর সমুদ্র পর্য্যন্ত সিন্ধু নদ। ইহা দুই মুখে সমুদ্রে প্রবেশ করিয়াছে। কিন্তু ডানিয়ুব নদীর পঞ্চ মুখের ন্যায় এই দুই মুখ পরস্পরের নিকটবর্তী নহে। উহারা নীল নদের মুখগুলির ন্যায়, যদ্বারা ঈজিপ্টের ব-দ্বীপ সৃষ্টি হইয়াছে। সিন্ধুও এই রূপ ব-দ্বীপ সৃষ্টি করিয়াছে। উহা ঈজিপ্ট হইতে ক্ষুদ্র নহে। ভারতীয় ভাষাতে ইহার নাম পট্টল। ভারতবর্ষের দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্বোল্লিখিত মহাসমুদ্র এবং উহাই ঐ দেশের পূর্ব সীমা।


স্ট্রাবো

ভারতবর্ষের উর্বরতা

 ভারতবর্ষে বৎসরে দুই বার ফল-শস্য উৎপন্ন হয়; ইহা দ্বারা মেগাস্থেনীস ঐ দেশের উর্বরতা প্রদর্শন করিয়াছেন। [এরাটস্থেনীসও এইরূপ বলেন। তিনি লিখিয়াছেন, ভারতবর্ষে শীত ও গ্রীষ্ম এই দুই ঋতুতে শস্য উপ্ত হয় এবং এই দুই ঋতুতেই বৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, এমন বৎসর দেখা যায় না, যাহাতে শীত ও গ্রীষ্ম, উভয় ঋতুই বৃষ্টিহীন। সুতরাং (প্রতিবৎসরই) প্রচুর শস্য প্রাপ্ত হওয়া যায়, কারণ ভূমি কখনও অনুর্বর হইতে পারে না। তৎপর, বৃক্ষে যথেষ্ট ফল উৎপন্ন হয়; এবং তরুলতার মুল— বিশেষতঃ দীর্ঘ নলের মূলগুলি—স্বভাবতই মিষ্ট, সিদ্ধ করিলেও মিষ্ট; কারণ তাহারা বৃষ্টিধারা বা নদীজল হইতে যে রস গ্রহণ করে, তাহা সূর্যকিরণে উত্তপ্ত হয়। এরাটস্থেনীস এস্থলে একটি বিশেষ শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন। অন্যান্য জাতির মধ্যে যাহা ফল ও রসের “পরিপক্বতা” বলিয়া অভিহিত ভারতবর্ষীয়েরা তাহাকে “পাক” (বা রন্ধন) বলে;