মেষও বন্য; তদ্ভিন্ন কুকুর ও ছাগ ও বৃষ স্বচ্ছন্দে ও স্বাধীনভাবে বিচরণ করে—তাহারা মেষপাল বা গোপালের শাসন কাহাকে বলে জানে না। তাহারা সংখ্যায় গণনাতীত—ইহা কেবল উক্ত দেশ সম্বন্ধীয় লেখকগণের উক্তি নহে, কিন্তু তদ্দেশীয় পণ্ডিতগণও এইরূপ বলিয়া থাকেন। ব্রাহ্মণগণ পণ্ডিতগণের মধ্যে গণ্য হইবার উপযুক্ত; ইঁহারাও এই সকল বিষয়ে একমত। জনশ্রুতি এই যে ভারতবর্ষে এক প্রকার একশৃঙ্গ জন্তু আছে, ভারতবাসীরা তাহাকে কর্তাজোন (Kortazon) বলে। এই জন্তু পূর্ণাবয়ব ঘোটকের ন্যায় বৃহৎ। ইহার শিখা ও পীতবর্ণ কোমল রোম আছে। ইহার পদগুলি অত্যুৎকৃষ্ট এবং ইহা অত্যন্ত দ্রুতগামী। ইহার পদগুলি সন্ধিবিহীন, হস্তীর পদের ন্যায় গঠিত; লাঙ্গুল শূকরের মত। ইহার ভ্রূযুগলের মধ্যভাগে শৃঙ্গ উৎপন্ন হয়। উহা সরল নহে, কিন্তু অতি স্বাভাবিক কুণ্ডলাকারে আবর্তিত এবং কৃষ্ণবর্ণ। প্রবাদ এই যে, এই শৃঙ্গ অতিশয় তীক্ষ্ণ। আমি শুনিয়াছি যে, ইহার রব সর্বাপেক্ষা কর্কশ ও উচ্চ। ইহা অপর জন্তুকে আপনার নিকট আসিতে দেয়, তাহাদিগের পক্ষে ইহা শান্ত। কিন্তু শুনিতে পাওয়া যায়, এই জন্তু স্বগোত্রের সহিত বিলক্ষণ কলহপরায়ণ। পুংজাতীয় জন্তুগুলি শৃঙ্গে শৃঙ্গে সংঘর্ষণ করিয়া যে কেবল পরস্পরের সহিত যুদ্ধে লিপ্ত হয় তাহা নহে, কিন্তু স্ত্রীজাতীয় জন্তুগুলির সহিতও যুদ্ধের আগ্রহ প্রকাশ করে। ইহাদিগের যুদ্ধপ্রিয়তা এত অধিক যে পরাজিত প্রতিপক্ষ হত না হওয়া পর্যন্ত ইহারা কিছুতে যুদ্ধ হইতে প্রতিনিবৃত্ত হয় না। ইহার দেহের সমস্তই অত্যন্ত বলশালী, কিন্তু শৃঙ্গের শক্তি অপরাজেয়। ইহা নির্জনে আহার ও একাকী বিচরণ করিতে ভালবাসে। সঙ্গমেচ্ছাকালে ইহা স্ত্রীজাতীয় জন্তুর সহিত শান্ত ব্যবহার করে, এমনকি তখন ইহারা একত্র আহারবিহার করে। কিন্তু এই কাল অতীত ও স্ত্রী-কর্তাজোন গর্ভবতী
পাতা:মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ - রজনীকান্ত গুহ (১৯৪৪).pdf/২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ
১৫