পাতা:মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ - রজনীকান্ত গুহ (১৯৪৪).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ
২১

হইলে তাহারা বৃদ্ধদিগকে বিশেষ অধিকার প্রদান করে না। [] তাহারা বহুবিবাহ করিয়া থাকে এবং যুগ্ম গো বিনিময়ে পিতামাতার নিকট হইতে কন্যা গ্রহণ করে। তাহারা পত্নীগণের মধ্যে কাহাকে কাহাকেও গৃহকর্মে সাহায্যের উদ্দেশ্যে এবং কাহাকে কাহাকেও সুখ ও বহু সস্তান প্রাপ্তির আশায় বিবাহ করে। তাহারা সতী হইতে বাধ্য না হইলে ব্যভিচারিণী হয়। কেহই মস্তকে মাল্যধারণ করিয়া বলিদান কিংবা যজ্ঞ সম্পাদন করে না। তাহারা বলির পশু খড়গ দ্বারা ছেদন না করিয়া শ্বাসরোধ করিয়া হত্যা করে, কারণ তাহাতে পশুটি অঙ্গহীন না হইয়া সমগ্রভাবে দেবতার চরণে উৎসর্গীকৃত হয়।

 যাহারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় তাহাদিগের হস্তপদ ছেদন করা হয়। যে অপরের অঙ্গ হানি করে সে কেবল সেই অঙ্গে বঞ্চিত হয় তাহা নহে, কিন্তু তাহার হস্তও ছেদন করা হইয়া থাকে। যদি কেহ কোনও শিল্পীর হস্ত কিংবা চক্ষু বিনষ্ট করে তবে সে প্রাণ হারায়। এই লেখক বলেন যে কোন ভারতবাসীই ক্রীতদাস রাখে না। [অনীসিক্রিটস বলেন যে মুষিকানস (Mousikanos) যে প্রদেশের রাজা উক্ত প্রথা সেই প্রদেশেরই বিশেষত্ব। ইত্যাদি।]

 রাজার শরীর রক্ষার জন্য স্ত্রী-রক্ষী নিযুক্ত হইয়া থাকে; তাহারাও পিতামাতার নিকট হইতে ক্রীত হয়। শরীররক্ষী ও অন্যান্য সৈন্যগণ দ্বারের বাহিরে অবস্থান করে। যে স্ত্রী মদ্যা—ভিভূত রাজাকে হত্যা করে সে তাঁহার উত্তরাধিকারীর পত্নীরূপে গৃহীত হয়। পুত্রগণ পিতার উত্তরাধিকারী। রাজা দিবসে নিদ্রা যাইতে পারেন না; এবং


  1. ন তেন বৃদ্ধো ভবতি যেনাস্য পলিতং শিরঃ।
    যো বৈ যুবাপ্যধীয়ানস্তং দেবাঃ স্থবিরং বিদুঃ॥

    মনু, ২।১৫৬।