রাত্রিতেও তাঁহাকে ষড়যন্ত্রের ভয়ে দণ্ডে দণ্ডে শয্যা পরিবর্তন করিতে হয়।
নৃপতি কেবল যুদ্ধের সময়ে রাজপ্রাসাদ হইতে বহির্গত হন, তাহা নহে; বিচারকার্য নির্বাহের জন্যও তাঁহাকে প্রাসাদ ত্যাগ করিতে হয়। তখন তিনি শেষ পর্যন্ত বিচারকার্যে নিযুক্ত থাকিয়া সমস্ত দিন বিচারালয়ে অতিবাহিত করেন, এমনকি দেহ পরিচর্যার সময় উপস্থিত হইলেও নিরস্ত হন না। দণ্ড দ্বারা দেহ ঘর্ষণ করাই দেহ-পরিচর্যা। তিনি বাদানুবাদ শুনিতে থাকেন এবং চারি জন পরিচারক দণ্ড দ্বারা তাঁহার দেহ ধর্ষণ করিতে থাকে। তিনি যজ্ঞ সম্পাদনের উদ্দেশ্যেও প্রাসাদের বাহিরে গমন করেন। তৃতীয়ত, মহা জাঁকজমকে শিকারের অভিপ্রায়ে তিনি প্রাসাদ ত্যাগ করেন। তখন তিনি রমণীবৃন্দে বেষ্টিত হইয়া গমন করেন; রমণী-শ্রেণীর বাহিরে বর্শাধারিগণ মণ্ডলাকারে সজ্জিত থাকে। রজ্জু দ্বারা পথ চিনিতে হয়; পুরুষ, এমনকি স্ত্রীলোকও রজ্জুর মধ্যে গমন করিলে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়। কাঁসর ও দুন্দুভিধারিগণ অগ্রে অগ্রে গমন করে। রাজা বেষ্টিত স্থানে শিকার করেন ও মঞ্চ হইতে তীর নিক্ষেপ করেন। নিকটে দুই তিন জন সশস্ত্র স্ত্রীলোক দণ্ডায়মান থাকে। তিনি উন্মুক্ত স্থানে হস্তিপৃষ্ঠে শিকার করেন। স্ত্রীলোকদিগের মধ্যে কেহ রথে, কেহ অশ্বোপরি, কেহ বা হস্তিপৃষ্ঠে, যুদ্ধযাত্রার মত সর্বপ্রকার অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হইয়া অবস্থান করে।[১]
- ↑ কালিদাস অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকে এই বর্ণনার সমর্থন করিয়াছেন। দ্বিতীয় অঙ্কের প্রারম্ভে বিদূষক দুষ্মন্ত সম্বন্ধে বলিতেছেন—এসো বানাসনহ্থথাহিং জঅনীহিং বনপুপ্ফুমালাধারিণীহিং পরিবুদো ইদো এব্ব আআচ্ছই পিঅবঅসে্সা। (এষঃ বাণাসনহস্তাভিঃ যবনীভিঃ বনপুষ্পমালাধারিণীভিঃ পরিবৃতঃ ইতঃ এব আগচ্ছতি প্রিয়বয়স্য।)