কাহারও কাহারও নাক নাই, কেবল মুখের উপরে দুইটি রন্ধ্র আছে। তাহারা তদ্দ্বারা নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ করে। ত্রিবিঘস্ত জাতির সহিত সারসেরা যুদ্ধ করে (হোমরও এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন), তিতির পক্ষীও যুদ্ধ করে, এগুলি রাজহংসের ন্যায় বৃহৎ।[১] ইহারা সারসদিগের ডিম্ব সংগ্রহ করিয়া বিনষ্ট করে, কারণ সারসেরা ইহাদিগেরই দেশে ডিম্ব প্রসব করে; এজন্য আর কোথায়ও সারসের ডিম্ব ও শাবক দৃষ্ট হয় না। এদেশে প্রায়শ সারস আহত হয় ও দেহে নিবদ্ধ ধাতবাস্ত্রের সূক্ষ্মাগ্র লইয়া পলায়ন করে। কর্ণপ্রাবরণ (Enoctokoitai) বনমানুষ ও অন্যান্য রাক্ষসের বৃত্তান্তও এইরূপ।[২] বনমানুষগুলিকে
- ↑ ক্টাসিয়সও (ভারতবিবরণ। ১১) বলেন, বামনজাতি ভারত-বর্ষবাসী। ভারতবাসীদিগের মতে এই বামনেরা কিরাত জাতি, তাহার সুস্পষ্ট প্রমাণ এই যে কিরাত বলিতেই বামন বুঝায়। প্রবাদ এই যে তাহারা গূধ্র ও গরুড়ের (ঈগলের) সহিত যুদ্ধ করে, এজন্য বিষ্ণুর বাহন গরুড়ের একটি নাম কিরাতাশী[১]। কিরাতগণ মঙ্গোলীয় জাতি, এজন্য ভারতবর্ষীয়েরা ইহাদিগকে মঙ্গোলীয় জাতির ন্যায় বর্ণনা করিতে যাইয়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কদর্যতা অত্যন্ত বাড়াইয়া তুলিয়াছে। ‘মুখ-বিহীন’ প্রভৃতি অভিধানের ইহাই মূল।— Schwanbeck.
^১ আদিপর্ব্বের ২৮ অধ্যায়ে গরুড়ের প্রতি বিনতার উক্তি—সমুদ্রকুক্ষাবেকান্তে নিষাদালয়মুত্তমম্।
নিষাদানাং সহস্রাণি তান্ ভুক্ত্বাঽমৃতমানয়॥ - ↑ Enoctokoitai—ইহাদিগের কর্ণ এত বৃহৎ যে তাহাতে শয়ন করা যায়। মহাভারতোক্ত কর্ণপ্রাবরণ জাতি।
করিয়াছেন। ইঁহারা বলেন যে এই বামনেরা ত্রিবিঘস্ত দীর্ঘ ছিল। স্বর্ণখননকারী পিপীলিকা, কীলকাকার মস্তকবিশিষ্ট নরপশু (Pans), সশৃঙ্গ গো ও হরিণ উদরসাৎ করে, এই প্রকার অজগর—ইত্যাদি অনেক উপাখ্যান ইঁহারা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন; অথচ এরাটস্থেনীস বলেন, ইঁহারাই এই সকল বিষয়ে একে অন্যকে মিথ্যাবাদী বলিয়া ঘোষণা করিয়াছেন।”