পাতা:মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ - রজনীকান্ত গুহ (১৯৪৪).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ
৩১

নেয়ার্খস বলেন, এই সকল বৃক্ষের ছায়া চতুর্দিকে পাঁচ শত ফুট বিস্তৃত, এবং উহাতে দশ সহস্র লোক স্থান পাইতে পারে। এই বৃক্ষগুলি এমন প্রকাণ্ড। তাঁহারা প্রতি ঋতুর ফল ও বৃক্ষের ত্বক্ আহার করিয়া প্রাণ ধারণ করেন; এই ত্বক্ খর্জ্জুর ফল অপেক্ষা কম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নহে।]

 ইঁহাদিগের পরে দ্বিতীয় জাতি কৃষকগণ। ইহারা সংখ্যায় ভারতবাসীদিগের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক। ইহাদিগকে যুদ্ধার্থ অস্ত্রধারণ করিতে হয় না, কিংবা যুদ্ধের সাহায্যার্থ কোনও কার্য করিতে হয় না; কিন্তু ভূমি কর্ষণ করাই ইহাদিগের একমাত্র কর্ম। ইহারা রাজাকে ও যে সকল নগরে রাজার পরিবর্তে স্বাতন্ত্র্য (Autonomy) প্রতিষ্ঠিত তাহাদিগকে কর প্রদান করে। ভারতবাসীদিগের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ উপস্থিত হইলে সৈন্যগণের পক্ষে কৃষকদিগকে উৎপীড়িত কিংবা ক্ষেত্রউচ্ছিন্ন করিবার বিধি নাই। তাহারা প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়া পরস্পরকে বধ করে আর অদূরে কৃষকগণ নিরুপদ্রবে আপন আপন কর্ম করে এবং ভূমি কর্ষণ, শন্য সংগ্রহ, বৃক্ষপল্লব ছেদন কিংবা শস্য কর্তনে নিযুক্ত থাকে।

 ভারতবাসীদিগের তৃতীয় জাতি রাখাল অর্থাৎ গোপাল ও মেযপাল। ইহারা গ্রামে কিংবা নগরে বাস করে না। ইহারা যাযাবর, পর্ব্বতোপরি অবস্থান করে। ইহারাও কর প্রদান করে, তাহা গো মেষ। ইহারা পক্ষী ও বন্য পশুর জন্য দেশময় বিচরণ করে।

 চতুর্থ জাতি শিল্পী ও পণ্যজীবী। ইহারা রাজভৃত্য; ইহাদিগকে শ্রমলব্ধ ধন হইতে কর প্রদান করিতে হয়; কিন্তু যাহারা যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণ করে তাহাদিগকে কর দিতে হয় না, বরং তাহারা রাজকোষ হইতে বেতন পায়। নৌ-নির্মাতৃগণ এবং নদীবক্ষে নৌকাপরিচালনে নিযুক্ত নাবিকগণও এই জাতির অন্তর্ভূত।

 পঞ্চম জাতি ভারতবর্যের যোদ্ধাগ্ণ। ইহারা সংখ্যায় কৃষকগণেরই