পাতা:মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ - রজনীকান্ত গুহ (১৯৪৪).pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ
৩৯

ষ্ট্রাবো

ভারতীয় পণ্ডিতগণ

 পণ্ডিতগণের সম্বন্ধে বলিতে যাইয়া মেগাস্থেনীস লিখিয়াছেন যে, ইঁহাদিগের মধ্যে যাঁহারা পর্বতে বাস করেন তাঁহারা ডায়োনীসসের উপাসক। (ডায়োনীসস যে ভারতবর্ষে আগমন করিয়াছিলেন) তাহার প্রমাণ বন্য দ্রাক্ষা। উহা কেবল তাঁহাদের দেশেই জন্মে—আইভি (lvy), লরেল (Laurel), মার্টল (Martle), বক্‌স-বৃক্ষ (Box-tree) এবং অন্যান্য চির হরিৎ তরুরাজি। এই সকল বৃক্ষের কোনটিই ইয়ুফ্রাটিস নদীর পূর্ব দিকে জন্মে না, কেবল উপবনে অল্পসংখ্যক জন্মিয়া থাকে; সেখানেও ইহাদিগের রক্ষার জন্য সাতিশয় যত্ন আবশ্যক। ডায়োনীসসের উপাসকদিগের ন্যায় তাঁহারা মসলিনবস্ত্র পরিধান করেন, মাথায় পাগড়ি পরেন, গন্ধদ্রব্য ব্যবহার করেন, উজ্জ্বল বর্ণের ফুলতোলা কাপড়ে দেহ সজ্জিত করেন এবং রাজারা যখন বাহিরে আগমন করেন তখন তাঁহাদিগের অগ্রে অগ্রে দুন্দুভি ও ঘণ্টাধ্বনি হইতে থাকে। কিন্তু যে সকল পণ্ডিত সমতলভূমিবাসী তাঁহারা হীরাক্লিসের পূজা করেন। কিন্তু এই বৃত্তান্ত কাল্পনিক। অনেক লেখক এ বিষয়ে, বিশেষত দ্রাক্ষা ও মদ্য সম্বন্ধে যাহা উক্ত হইয়াছে তদ্বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করিয়াছেন। কারণ আর্মেনিয়ার অধিকাংশ, সমগ্র মেসপটমিয়া ও মীডিয়া, এবং পারস্য ও আর্মেনিয়া পর্যন্ত সমুদায় ভূভাগ ইয়ুফ্রাটিসের পূর্ব দিকে অবস্থিত। শুনা যায়, এই সকল দেশের প্রত্যেকটির অনেক স্থানেই উত্তম দ্রাক্ষা জন্মে ও উৎকৃষ্ট মদ্য প্রস্তুত হয়।

 মেগাস্থেনীস পণ্ডিতদিগকে অন্য রূপে বিভক্ত করিয়াছেন। তাঁহার মতে পণ্ডিতগণ দুই ভাগে বিভক্ত। তিনি এক ভাগকে ব্রাহ্মণ ও অপর ভাগকে শ্রমণ নামে অভিহিত করিয়াছেন। ব্রাহ্মণগণই সর্বাপেক্ষা