পাতা:মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ - রজনীকান্ত গুহ (১৯৪৪).pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গ্রন্থের সারসংগ্রহ

ডায়োডোরস

 ভারতবর্ষের আকার চতুর্ভুজ ক্ষেত্রের ন্যায়। ইহার পূর্ব্ব ও দক্ষিণ পার্শ্ব মহাসাগর কর্তৃক পরিবেষ্টিত। উত্তর দিকে হিমদ (Hemodos) পর্বত স্কাইথিয়া (Skythia) হইতে ভারতবর্ষকে ব্যবচ্ছিন্ন করিতেছে। স্কাইথিয়া দেশে শক নামক স্কাইথীয় জাতি বাস করে। চতুর্থ অর্থাৎ পশ্চিম সীমায় সিন্ধু নামক নদ প্রবাহিত হইতেছে। সিন্ধু নদ এক নীল নদ ব্যতীত আর সমুদায় নদী অপেক্ষা বৃহৎ। শুনা যায়, পূর্ব হইতে পশ্চিম পর্যন্ত ভারতবর্ষের বিস্তার ২৮ হাজার স্টাডিয়ম্, এবং উত্তর হইতে দক্ষিণ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৩২ হাজার স্টাডিয়ম্। এই দেশের আয়তন এত বিশাল যে, মনে হয় প্রায় সমগ্র উত্তর গ্রীষ্মমণ্ডল ইহার অন্তর্ভূত। এইজন্য ভারতের দূরতর প্রদেশে অনেক সময়ে শঙ্কু ছায়াপাত করে না এবং রাত্রিকালে সপ্তর্ষিমণ্ডল দৃষ্টিগোচর হয় না; সুতরাং আমরা শুনিতে পাই, এই সকল স্থানে দক্ষিণ দিকে ছায়া পতিত হয়।

 ভারতবর্ষে বহু বিশাল পর্বত আছে সেগুলি সর্ববিধ ফলবান্ বৃক্ষরাজিতে পরিপূর্ণ; এবং অনেক বিস্তীর্ণ, উর্বর সমতল ভূমি আছে; প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভিন্ন হইলেও সে সমুদায়ই অসংখ্য নদী দ্বারা খণ্ডিত ও পরিচ্ছিন্ন। সমতল ভূমির অধিকাংশই জলপ্রণালী দ্বারা সিক্ত, এজন্য বৎসরে দুই বার শস্য উৎপন্ন হয়। এই দেশ সর্বপ্রকার জীবজন্তু, পশুপক্ষীর আবাসভূমি; তাহারা আকার ও শক্তিতে বিবিধ ও বিচিত্র। অধিকন্তু, ভারতে অগণ্য অতিকায় হস্তী বিচরণ করে; ইহারা অপর্যাপ্ত খাদ্য প্রাপ্ত হইয়া থাকে, এজন্য লিবীয়াদেশীয় হস্তী অপেক্ষা এগুলি অনেক