পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেঘনাদবধ কাব্য।
১৮৯—১৯৪

পূর্ব্বদুঃখ! সভাজন কাঁদিল সকলে।
অশ্রুময় আঁখি পুনঃ কহিলা রাবণ,
মন্দোদরীমনোহর;—“কহ, রে সন্দেশ–
বহ, কহ, শুনি আমি, কেমনে নাশিলা
দশাননাত্মজ শূরে দশরথাত্মজ?”
“কেমনে, হে মহীপতি,” পুনঃ আরম্ভিল
ভগ্নদূত, “কেমনে, হে রক্ষঃকুলনিধি,
কহিব সে কথা আমি, শুনিবে বা তুমি?
যথা অগ্নিময়চক্ষু হর্য্যক্ষ দুর্জ্জয়,
কড়মড়ি ভীষণ দর্শন, পড়ে লাফি
বৃষস্কন্ধে, রামচন্দ্র আক্রমিলা রোষে
কুমারে! চৌদিকে এবে সমরতরঙ্গ
উথলিল, সিন্ধু যথা দ্বন্দ্বি বায়ু সহ
নির্ঘোষে! ভাতিল অসি অগ্নিশিখাসম
ধূমপুঞ্জসম চর্ম্মাবলীর মাঝারে
অযুত! নাদিল কম্বু অম্বুরাশি রবে!—
আর কি কহিব, দেব? পূর্বজন্মদোষে,
একাকী বাঁচিনু আমি! হায় রে বিধাতঃ,
কি পাপে এ তাপ আজি দিলি তুই মোরে?
কেন না শুইনু আমি শরশয্যোপরি,
হৈমলঙ্কা অলঙ্কার বীরবাহু সহ
রণভূমে? কিন্তু নহি নিজ দোষে দোষী।
ক্ষত বক্ষঃস্থল মম, দেখ, নৃপমণি,
রিপু-প্রহরণে; পৃষ্ঠে নাহি অস্ত্রলেখা।”
এতেক কহিয়া স্তব্ধ হইল রাক্ষস
মনস্তাপে। হরষে বিষাদে লঙ্কাপতি