পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৪০).pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫—৪৬
মেঘনাদবধ কাব্য: প্রথম সর্গ
১৫

মূঢ়মতি, জননীর স্নেহ তার প্রতি
সমধিক। ঊর[১] তবে, ঊর দয়াময়ি
বিশ্বরমে! গাইব, মা, বীররসে ভাসি,
মহাগীত; ঊরি, দাসে দেহ পদছায়া।
— তুমিও আইস, দেবি, তুমি মধুকরী
কল্পনা![২] কবির চিত্ত-ফুলবন-মধু
লয়ে, রচ মধুচক্র, গৌড়জন যাহে
আনন্দে করিবে পান মুধা নিরবধি।
কনক-আসনে বসে দশানন বলী—
হেমকূট-হৈমশিরে শৃঙ্গবর যথা
তেজঃপুঞ্জ। শত শত পাত্রমিত্র আদি
সভাসদ্, নতভাবে বসে চারি দিকে
ভূতলে অতুল সভা—স্ফটিকে গঠিত;
তাহে শোভে রত্নরাজী, মানস-সরসে
সরস কমলকুল বিকসিত যথা।
শ্বেত, রক্ত, নীল, পীত স্তম্ভ সারি সারি
ধরে উচ্চ স্বর্ণছাদ, ফণীন্দ্র[৩] যেমতি,
বিস্তারি অযুত ফণা, ধরেন আদরে
ধরারে। ঝুলিছে ঝলি[৪] ঝালরে মুকুতা,
পদ্মরাগ, মরকত, হীরা; যথা ঝোলে
(খচিত মুকুলে ফুলে) পল্লবের মালা
ব্রতালয়ে। ক্ষণপ্রভা[৫] সম মুহুঃ হাসে


  1. ঊর—আবির্ভূত হও।
  2. মধুকরী কল্পনা—রূপক অলঙ্কার। কবিকল্পনাও যেন এক জন দেবী।
  3. ফণীন্দ্র—বাসুকি।
  4. ঝলি—ঝল ঝল করিয়া।
  5. ক্ষণপ্রভা—বিদ্যুৎ।