পাতা:মেঘ-মল্লার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেঘ-মার B). আমি উঠে বসলুম। সে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে রইল। দেখলুম। তার শরীর আগেকার চেয়ে খুব রোগ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তার মুখখানি প্রতিমার মতই টলটল করছে। বয়স যদিও বাইশ তেইশ হ’ল, তার মুখ এখনও তের বছরের মেয়েটির মতই কচি। কথা আরম্ভ করবার ভূমিকাস্বরূপ বললুম-আজি বড় গরম পড়েছে, না ? উমারাণী বললে—ই্যা দাদা। আমি ভাৱলুম। আপনি বুঝি ঘুমিয়ে পড়েছেন, আপনি দিনমানে ঘুমোন না। বুঝি ? বললুম-মাঝে মাঝে হয়তো ঘুমোই। আজ আর ঘুমোব না। আয় এখানে বোস, গল্প করি । তাকে কাছে বসালুম। তবে চুলেব অবস্থা দেখে বুঝলুম সে চুলের যত্ন ক’রে না। মুখের আশে পাশে কেঁাকডো চুলের রাশ অযত্ন বিন্যস্ত ভাবে পড়েছিল, চুলগুলোেব রং একটু কটা হয়ে পড়ছিল। রাত্রের মত চুলগুলো কানেব পাশ দিযে তুলে দিতে দিতে বললুম-তোর শরীর তো খুব খারাপ হয়ে গেছে ? বিয়ের পর সেই সমল কেমনটি ছিলি ! খুব কি জ্বর হয় ? একটু হাসি ছাড়া। সে এ কথােব কোন উত্তর দিলে না। আমি বললুম-না, এ কথা ভাল না। রাণী। আমি গিয়ে একটা ওষুধ পাঠিয়ে দেব, সেইটে নিয়ম-মত খেতে হবে। না হলে এ মে মহা কষ্ট । একটু পবে সে বললে-ত! হ’লে সত্যি দাদা, আমি কিন্তু বিয়ের চেষ্টা করব । বলুন । আমি তার কথায় মনে বড় কৌতুক অনুভব করলুম। এই অবোধ মেয়েটা জানে না যে সে এমনি একটা প্ৰস্তাব উত্থাপন ক’রে বসেছে, যাকে কাৰ্য্যে পরিণত করা তার ক্ষুদ্র শক্তির বাইরে। বললুম-বিকিস নে, রাণী। খানিকক্ষণ হয়ে গেল, সে আর কথা কয় না দেখে পেছন ফিরে দেখি ছেলেমানুষে হঠাৎ ধমক খেলে যেমন ভারসাহারা চোখে তাকায়, তার চোখে তেমনি দৃষ্টি। মনে হ’ল, একটা ভুল করেছি, উমারাণী সেই ধরণের মেয়ে যারা নিজেকে জোর ক’রে কখনও প্রচার করতে পারে না, পরের ইচ্ছার সঙ্গে