পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দু-রাজত্ব-তাম্রলিপ্ত-রাজ্য। 》e শূৰ্ববংশের অধিকার লুপ্ত করিয়া বিজয় সেন যে সময় এ প্রদেশ অধিকার করেন, সেই সময় তিনি অনন্তবৰ্ম্মার বংশকে উৎখাত করিয়া রাজা গোপীচক্রের কোন পূৰ্ব্বপুরুষের হস্তে তাম্রলিপ্ত রাজ্যের তার অপর্ণ কেরিয়া থাকিবেন। অনন্তবৰ্ম্ম স্বরাজ্য হইতে বিতাড়িত হইয়৷ উৎকলে আশ্রয় লইয়াছিলেন। উৎকলের খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর ইতিহাস এক অরাজকতার ইতিহাস। ঐ সময় কেশরি-রাজবংশের অবসানে তাহাদের দুৰ্ব্বলতায় সুযোগ পাইয়া প্রাদেশিক শাসনকর্তৃগণ এক প্রকার নিজ নিজ অধিকারে রাজা হুইয়া উঠিয়াছিলেন। দেশের যখন এইরূপ দুরবস্থা, তখন প্রজাগণ প্রবলের অত্যাচারে পীড়িত হইয়া অরাজকত দূর করিবার জন্য অনন্তবৰ্ম্মাকে রাজা নিৰ্ব্বাচন করিয়াথাকিবেন। পরবর্ঘকালে, পূৰ্ব্ব-অপমানের প্রতিশোধ লইতেই বোধ হয়, অনস্তবৰ্ম্ম উৎকলের প্রমপুরে আনুকূল্যেই স্বীয় রাজ্য বা পিতৃরাজ্যের অপহর্তা বিজয় সেনের রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন। কিন্তু স্থায়িভাবে তাহা অধিকার করিতে পারেন নাই—তাহ পূৰ্বেই উল্লেখ করিয়াছি। তাহা হইলে বলা যাইতে পারে, এই অনন্তবৰ্ম্মার বংশও এক সময় তাম্রলিপ্তে রাজত্ব করিয়াছিলেন । তবে বলা বাহুল্য, এ সকলই আমাদের অকুমান মাত্র ; বিজ্ঞান-সন্মত প্রণালীতে রচিত ইতিহাসের উপাদানস্বরূপে গ্ৰহণ করিতে হইলে অপর প্রমাণের সমর্থন আবশ্যক। অদ্যাবধি এমন কোন তাম্রশাসন, খোদিত লিপি বা প্রাচীন মুদ্র আবিষ্কৃত হয় নাই, বদ্বারা এই সকল অনুমানের ঐতিহাসিকত্ব প্রমাণীকৃত হইতে পারে। পরবর্তী কালে অনঙ্গভীমদেব কর্তৃক এই প্রদেশ অধিকৃত হইলে পর তাম্রলিপ্ত-রাজ্যও উৎকলাধিপতির অধিকারভুক্ত হয়। ইহার পর হইতে তাম্রলিপ্তের শেষ হিন্দু-রাজত্বের ও মুসলমান-রাজত্বের ইতিহাস উৎকলের ইতিহাসের সহিত জড়িত।