পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
8
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

 অপেক্ষাকৃত পরবর্ত্তিকালে সুহ্ম-রাজ্যের রাজধানী তাম্রলিপ্ত-নগরী একটি বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হওয়ায় রাজধানীর নামানুসারে ঐ রাজ্য ‘তাম্রলিপ্ত’রাজ্য নামেও সময়ে সময়ে পরিচিত হইত। সুহ্ম ও তাম্রলিপ্ত কোন কোন সাহিত্যে এই দুই নামে আবার দুইটি পৃথক্ রাজ্যের নামোল্লেখও দেখিতে পাওয়া যায়। মহাভারতের সভাপর্ব্বে লিখিত আছে যে, ভীম দিগ্বিজয়ে আসিয়া পুণ্ড্র দেশাধিপতি বাসুদেব ও কৌশিকীকচ্ছনিবাসী রাজা মনৌজা এই দুই বীরকে পরাজয় করিয়া বঙ্গরাজ্যের প্রতি ধাবমান হন। পরে তাম্রলিপ্ত ও সুহ্মদিগের অধীশ্বর এবং সাগরকূলবাসী ম্লেচ্ছগণকে পরাজয় করেন।[১] আধুনিক বঙ্গদেশের পূর্ব্বভাগই তখন বঙ্গদেশ এবং পশ্চিমভাগই পুণ্ড্রদেশ নামে অভিহিত হইত। জানা যাইতেছে, ইহাদের দক্ষিণেই সমুদ্রোপকূলে সুহ্ম ও তাম্রলিপ্ত অবস্থিত ছিল। কবি দণ্ডীর রচিত দশকুমারচরিতেও সুহ্ম-রাজ্যের নামোল্লেখ আছে। দামোলিপ্ত বা তাম্রলিপ্ত তৎকালেও সুহ্ম-রাজ্যের রাজধানী ছিল। তথায় দেশীয় ও বিদেশীয় জাহাজ সকল থাকিত। দশকুমারচরিতে লিখিত আছে যে, তাম্রলিপ্ত হইতে জাহাজে চড়িয়া তিনি রাক্ষসদিগের দেশে উপস্থিত হন এবং তথায় রামেসু নামক এক যবনের সহিত যুদ্ধ করেন। দশকুমারচরিতের ষষ্ঠ উচ্ছ্বাসের নায়ক মিত্র গুপ্তকে রাজপুত্ত্র ভীমধন্বা এই স্থানে সাগরে নিক্ষেপ করিয়াছিলেন।[২] পণ্ডিতগণ স্থির করিয়াছেন,


  1. মহাভারত - সভাপর্ব্ব, ৩১ অধ্যায়, ২১-২৫ শ্লোক।
  2. অনেকে মনে করেন, দশকুমারচরিত খৃষ্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে লিখিত; কিন্তু মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়ের মতে উহা খৃঃ পূর্ব্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে লিখিত।