মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত বর্ত্তমান তমলুক নগরটি প্রাচীন দামোলিপ্ত বা তাম্রলিপ্ত নগরের হীন পরিণতি।[১]
সুহ্ম ও তাম্রলিপ্তরাজ্যের উত্তর ও পশ্চিমে পুণ্ড্র রাজ্য, পূর্ব্বে বঙ্গরাজ্য, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে কলিঙ্গ-রাজ্য, এইরূপ নির্দ্দেশই জানা যাইতেছে। নগেন্দ্রবাবু লিখিয়াছেন, “কলিঙ্গ-রাজ্য বর্ত্তমান তমলুকের সীমান্ত হইতে আরম্ভ হইয়া দক্ষিণে গোদাবরী নদী পর্য্যন্ত বিস্তৃত ছিল।”[২] তাহা হইলে দেখা যাইতেছে, তখন বর্ত্তমান মেদিনীপুর জেলার উত্তর ও পূর্ব্ব ভূভাগের অধিকাংশই সুহ্ম ও তাম্রলিপ্ত রাজ্যের অন্তর্ভূত হইয়াছিল। অবশিষ্টাংশ—যাহা তমলুকের দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থিত, উহাই কেবল কলিঙ্গ-রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। উত্তরকালে এই বিভাগেরও পরিবর্ত্তন হয়।
পরবর্ত্তিকালের সাহিত্যে আমরা উৎকল ও উড্র নামে আরও দুইটি রাজ্যের নিদর্শন পাই। রঘুবংশে কালিদাস কপিশা নদীর পরপার উৎকল-রাজ্য।হইতেই উৎকলের সীমা নির্দেশ করিয়াছেন। কপিশা নদী বর্ত্তমান মেদিনীপুর জেলার মধ্য দিয়া প্রবাহিত কাঁসাই বা কংসাবতী নদীর নামান্তর। কালিদাসের বর্ণনামতে উৎকলদেশের দক্ষিণেই কলিঙ্গ-রাজ্য ছিল। রঘুবংশে দেখিতে পাওয়া যায়, রঘু স্বীয় রাজধানী হইতে সুহ্মদেশ পর্য্যন্ত সমস্ত রাজ্য জয় করিয়া পূর্ব্ব-মহাসাগরের তালীবনশ্যাম উপকণ্ঠে সুহ্মরাজ্যে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিলেন। পরে উৎকলবাসিগণ তাঁহার পথ প্রদর্শক
- ↑ Asiatic Researches vol VIII. p. 33 I.
Ancient India as described by P'tolemy by J. Crindle p. 169. - ↑ জন্মভূমি পত্রিকা—১ম খণ্ড ৪৪৮ পৃষ্ঠা।