পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/২৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১০
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

পাঞ্জীর পূর্ব্বোক্ত বিভাগ হইতেও উহাই উপলব্ধি হয়। তমলুকের দক্ষিণেই সবঙ্গ থানা বা জৌলিতি দণ্ডপাঠ ছিল দেখা যায়।

 খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে সুবিখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক ইউয়ান চোয়াং যখন ভারতবর্ষে আগমন করিয়াছিলেন, তখন তিনি তাম্রলিপ্ত-কর্ণসুবর্ণ-রাজ্যরাজ্য দেখিয়া গিয়াছিলেন। সে সময় কিছুদিনের জন্য কর্ণসুবর্ণ নামে আরও একটি রাজ্যের উৎপত্তি হইয়াছিল। মুর্শিদাবাদ নগরীর ছয় ক্রোশ দক্ষিণে ভাগীরথীর দক্ষিণতটে যে একটি প্রাচীন নগরের ভগ্নাবশেষ ভূগর্ভে প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে, দেখা যায়, কোনও কোনও ঐতিহাসিকের মতে উহারই প্রাচীন নাম কর্ণসুবর্ণ; অধুনা রাঙ্গামাটী নামে অভিহিত।[১] আমাদের কিন্তু অন্যরূপ মনে হয়। উক্ত পরিব্রাজক পৌণ্ড্রবর্ধন হইতে কামরূপ, তথা হইতে সমতট, সমতট হইতে তাম্রলিপ্ত, তাম্রলিপ্ত হইতে কর্ণসুবর্ণ এবং কর্ণসুবর্ণ হইতে উড়িষ্যায় গমন করিয়াছিলেন। তাঁহারই লিখিত বিবরণ হইতে জানা যায় যে, তাম্রলিপ্ত হইতে কর্ণসুবর্ণ ও কর্ণসুবর্ণ হইতে উড়িষ্যার পরস্পর দূরত্ব ৭০০ লি (প্রায় ১৪০ মাইল) ছিল। ইউয়ান চোয়াঙের ভ্রমণকালে জাজপুর উড়িষ্যার রাজধানী ছিল। এই জাজপুর ও তাম্রলিপ্ত উভয়ই সুপরিচিত স্থান। বাঙ্গালার মানচিত্রের উপর জাজপুর ও তাম্রলিপ্ত হইতে ৭০০ লি দীর্ঘ দুইটি রেখা অঙ্কিত করিলে, উভয় রেখা বর্ত্তমান সিংহভূম জেলার মধ্যে কোন স্থানে সংযুক্ত হয়। আমাদের মনে হয়, এই সিংহভূম জেলার কোন স্থানে পরিব্রাজকবর্ণিত “কি-লো-ন-সু-ফ-ল-ন” বা কর্ণ-


  1. J. A. S. B. Vol. XXII. pp. 281-282.