পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন কীৰ্ত্তি ও কাহিনী । Sojo o আনন্দোচ্ছ্বাসে একদিন মুখরিত হইয়াছে! ঐ সকল সরসীর সোপানমালা লীলাললিতগামিনী কত শত কুলবালার অলক্তলাঞ্ছিত চরণের মধুর মঞ্জীর ধ্বনিতে প্রতিধ্বনিত হইয়াছে ! কত রাজা, মহারাজা, কত জ্ঞানী, গুণী, কৰ্ম্ম একদিন ঐ প্রস্তর মূৰ্ত্তিগুলির চরণতলে মস্তক স্পর্শ করিয়া ধন্ত হইয়াছেন—কৃতাৰ্থ হইয়াছেন । আর আজ সেই গগনস্পশ্রী মন্দির গুলি, সে কারুকার্য্য বহুল অট্টালিকা সমূহ ধরণীর ধূলাতে পরিণত হইয়াছে ! সে বনদেবীর দর্পণের মত অনাবিল, নীল, শীতল, স্বচ্ছ, বিশাল দীধিকাগুলির খণ্ডনীলিমাতুল্য জলরাশি কোথায় অন্তহিত হইয়৷ গিয়াছে। সে সুন্দর নয়নাভিরাম প্রস্তর মূৰ্ত্তিগুলির অঙ্গে ছাতা পড়িয়াছে রঙ্গ জলিয়া গিয়াছে, কাহারও মুখ ভাঙ্গিয়াছে, কাহারও হাত ভাঙ্গিয়াছে, কাহারও পা ভাঙ্গিয়াছে ! মন্দিরে এখন আর দেবতা নাই। দুর্গগুলি এখন বন্যজন্তুর বাসভূমি। দীর্ঘিকাগুলি কৃষিক্ষেত্রে পরিণত হইয়াছে ! প্রস্তর মূৰ্ত্তিগুলি মুক্ত প্রাঙ্গণে অথবা বৃক্ষমূলে আশ্রয় প্রাপ্ত হইয়াছে। মেদিনীপুরের বৈভব সমূহ নিৰ্ম্মম কালের প্রভাবে এইরূপে স্মৃতিমাত্রে পর্য্যবসিত হইলেও মেদিনীপুয়েস্তুবিজন পল্লী ও নদী সৈকত অৰ্দ্ধদগ্ধ অস্থি খণ্ডের ন্যায় এখনও দু' চারিট কীৰ্ত্তি যাহা বক্ষে ধারণ করিয়া রাথিয়াছে তাহা হইতে উহাদেয় প্রাচীন সমৃদ্ধির বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়। তমলুকের বর্গভীমাদেবীর মন্দির এবং কর্ণগড়ের কীৰ্ত্তিরাশি তৎকালীন ভাস্কর ও স্থপতিদিগের- কৰ্ম্মকুশলতার প্রকৃষ্ট পরিচায়ক । গড়বেতা, গগনেশ্বর, নয়াগ্রাম প্রভৃতি স্থানের প্রস্তর দুর্গগুলি দেখিলে মনে হয় না যে, সে গুলি আমাদেরই পূৰ্ব্ব পুরুষগণের কীৰ্ত্তি। দাতনের শরশঙ্কা দীঘি এখনও বঙ্গদেশে অতুলনীয় । বগড়ীর কৃষ্ণরায়জীউর, কেশিয়াড়ীর সর্বমঙ্গলার, থেলাড়ের অশ্বান্ধঢ় যুগলমূৰ্ত্তির ও দোরে।