পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৩৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ভৌমিক বিবরণ।
১৯

কেচিদ্‌বদন্তি ভূপাল ভানকং ক্ষৌমভূমিকম্।
কদলীপট্টসূত্রাণামাকরো হি স্থলে স্থলে॥
পট্টসূত্রস্য জননাৎ ক্ষৌমভূমিশ্চ বিশ্রুতা।
ধীবরাণাঞ্চ নিবাসো বর্ত্ততে যত্র ভূরিশঃ॥
মধ্যদেশিব্রাহ্মণানাং বসতির্বৈ পুরা কৃতা।
বল্লালসেনেন ভূপাল রাজাদিশূরসূনুনা॥
অকুলীন-কুলীনত্ব-ব্রাহ্মণানাং বিভাগশঃ।
স্থানং ত্রিষু হি দেশেষু কৃতং বৈ নৃপসূনুনা॥”

 কংসাবতী, শিলাবতী, বকদ্বীপ (বগড়ী) ও মণ্ডলঘাট এই চতুঃসীমান্তর্ব্বর্ত্তী প্রদেশটি তৎকালে ভানদেশ নামে পরিচিত ছিল। মধ্যদেশী ব্রাহ্মণেরা ভানদেশের অধিবাসী ছিলেন। নানাপ্রকার বহুমূল্য বস্ত্র এই প্রদেশে প্রস্তুত হইত। ভানদেশে তিনটি প্রধান নগর ছিল;— চন্দ্রকোণা, ভূরিশ্রেষ্ঠ ও বলিয়ার। চন্দ্রকোণা নগর মেদিনীপুর জেলার উত্তর সীমায় এখনও বিদ্যমান আছে; ভূরিশ্রেষ্ঠ এখন মেদিনীপুর জেলায় নাই, হুগলি জেলায় গিয়াছে। এক সময় ভূরিশ্রেষ্ঠ বা ভুরসুট দক্ষিণরাঢ়ের রাজধানী ছিল। ৯১৩ শকে ভুরসুটে পাণ্ডুদাস নামে এক রাজা রাজত্ব করিতেন। তাঁহার উৎসাহে শ্রীধর পণ্ডিত বৈশেষিক দর্শনের প্রশস্তপাদ ভাষ্যের এক টীকা লিখেন;—টীকার নাম “ন্যায়কন্দলী।” উহা এখনও বৈশেষিক দর্শনের একখানি প্রধান গ্রন্থ বলিয়া গণনীয়। ১০৯২ খৃষ্টাব্দে যখন কৃষ্ণমিশ্র চণ্ডেল রাজার অভ্যর্থনার্থ নাটক রচনা করেন, তখন ভূরিশ্রেষ্ঠতে নানা শাস্ত্রের আলোচনা হইত। তত্রত্য ব্রাহ্মণেরা কুমারিলের মত মানিতেন না; প্রভাকরমতের শালিকনখী পুঁথি তাঁহাদের পাঠ্য ছিল এবং তাঁহারা আপনাদিগকে অতি পবিত্র ব্রাহ্মণ বলিয়া গর্ব্ব করিতেন। এই ভূরিশ্রেষ্ঠেই