বাঙ্গালার মহাকবি ভারতচন্দ্রের জন্ম হইয়াছিল। কিন্তু ভূরিশেষ্ঠের এখন আর সে দিন নাই। তামাকের জন্যই এখন লোকে ভূরিশ্রেষ্ঠের নামোল্লেখ করে। বলিয়ার নগর কোথার ছিল, তাহা এখনও জানা যায় নাই।[১]
মাদলাপাঞ্জীতে উৎকলের রাজস্ব-বিভাগে বকদ্বীপ, ভানদেশ, তমলুক, মণ্ডলঘাট প্রভৃতি স্থানের নাম নাই; এ সকল স্থান তখন তাম্রলিপ্ত-রাজ্যের অন্তভূর্ত ছিল। আমাদের বিবেচনায় তাম্রলিপ্ত-রাজ্যও সে সময় ঐ সকল রাজস্ব-বিভাগে বিভক্ত ছিল। মোগল-সম্রাটের রাজস্ব-সচিব সেই সকল প্রাচীন বিভাগের ভাঙ্গাগড়া করিয়াই পূর্ব্বোক্ত মহালগুলি গঠিত করিয়া থাকিবেন।
খৃষ্টীয় ১৬৪৬ অব্দে সম্রাট্ সাজাহানের রাজত্বকালে তাঁহার দ্বিতীয় পুত্র সুলতান সুজা দ্বিতীয়বার বাঙ্গালা, বিহার ও উড়িষ্যার শাসনকর্ত্তা সাহাজানের সময়ের রাজস্ব-বিভাগনিযুক্ত হইয়া আসেন। তিনি রাজা তোডরমল্লের সময়ের উড়িষ্যার অন্তর্গত জলেশ্বর, কটক ও ভদ্রক সরকারকে বিচ্ছিন্ন করিয়া ১২টি সরকার ও ২৭৬টি মহালে বিভক্ত করেন। এই বিভাগানুসারে বর্ত্তমান মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশই সরকার জলেশ্বর, সরকার মুজকুরি, সরকার মালঝিটা ও সরকার গোয়ালপাড়ার অন্তর্ভূত হইয়াছিল। মোটামুটি বলা যাইতে পারে যে, বর্ত্তমান তমলুক মহকুমার প্রায় সম্পূর্ণটি এবং জঙ্গলমহালের কিয়দংশ ও দাঁতন থানা ব্যতীত সদর মহকুমার বাকী সমস্ত অংশই সরকার গোয়ালপাড়ার, এগরা ও রামনগর থান দুইটি ব্যতীত কাঁথি মহকুমার অবশিষ্টাংশ সরকার মালঝিটার, রামনগর থানা
- ↑ বঙ্গীয় সাহিত্যপরিষদের মেদিনীপুর শাখার ৪র্থ বার্ষিক উৎসবের সভাপতি মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর অতিভাষণ।