পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৩৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২০
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

বাঙ্গালার মহাকবি ভারতচন্দ্রের জন্ম হইয়াছিল। কিন্তু ভূরিশেষ্ঠের এখন আর সে দিন নাই। তামাকের জন্যই এখন লোকে ভূরিশ্রেষ্ঠের নামোল্লেখ করে। বলিয়ার নগর কোথার ছিল, তাহা এখনও জানা যায় নাই।[১]

 মাদলাপাঞ্জীতে উৎকলের রাজস্ব-বিভাগে বকদ্বীপ, ভানদেশ, তমলুক, মণ্ডলঘাট প্রভৃতি স্থানের নাম নাই; এ সকল স্থান তখন তাম্রলিপ্ত-রাজ্যের অন্তভূর্ত ছিল। আমাদের বিবেচনায় তাম্রলিপ্ত-রাজ্যও সে সময় ঐ সকল রাজস্ব-বিভাগে বিভক্ত ছিল। মোগল-সম্রাটের রাজস্ব-সচিব সেই সকল প্রাচীন বিভাগের ভাঙ্গাগড়া করিয়াই পূর্ব্বোক্ত মহালগুলি গঠিত করিয়া থাকিবেন।

 খৃষ্টীয় ১৬৪৬ অব্দে সম্রাট‍্ সাজাহানের রাজত্বকালে তাঁহার দ্বিতীয় পুত্র সুলতান সুজা দ্বিতীয়বার বাঙ্গালা, বিহার ও উড়িষ্যার শাসনকর্ত্তা সাহাজানের সময়ের রাজস্ব-বিভাগনিযুক্ত হইয়া আসেন। তিনি রাজা তোডরমল্লের সময়ের উড়িষ্যার অন্তর্গত জলেশ্বর, কটক ও ভদ্রক সরকারকে বিচ্ছিন্ন করিয়া ১২টি সরকার ও ২৭৬টি মহালে বিভক্ত করেন। এই বিভাগানুসারে বর্ত্তমান মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশই সরকার জলেশ্বর, সরকার মুজকুরি, সরকার মালঝিটা ও সরকার গোয়ালপাড়ার অন্তর্ভূত হইয়াছিল। মোটামুটি বলা যাইতে পারে যে, বর্ত্তমান তমলুক মহকুমার প্রায় সম্পূর্ণটি এবং জঙ্গলমহালের কিয়দংশ ও দাঁতন থানা ব্যতীত সদর মহকুমার বাকী সমস্ত অংশই সরকার গোয়ালপাড়ার, এগরা ও রামনগর থান দুইটি ব্যতীত কাঁথি মহকুমার অবশিষ্টাংশ সরকার মালঝিটার, রামনগর থানা


  1. বঙ্গীয় সাহিত্যপরিষদের মেদিনীপুর শাখার ৪র্থ বার্ষিক উৎসবের সভাপতি মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর অতিভাষণ।