পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৪০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७१२ মেদিনীপুরের ইতিহাস । এক প্রস্তরময় মহাদেব প্রতিষ্ঠিত ছিলেন । তৃতীয় দ্বারটা মৃন্মর দরজা’ বা ‘মেটে দুয়ার’ নামে বিখ্যাত। উহার দুই পাশ্বের প্রাচীরের উপর দিয়া তিনজন অশ্বারোহী পাশাপাশি যাইতে পারিত। চতুর্থ দ্বারটী নারায়ণগড়ের পাশ্ববৰ্ত্তী কেলেঘাই নদীর গর্ভে কোন স্থানে ছিল । জনশ্রুতি, এই দ্বারট এরূপ কৌশলে নিৰ্ম্মাণ করা হইয়াছিল যে, উহা অবরুদ্ধ করিলে নারায়ণগড়ের বাহিরের সমস্ত পথ জলমগ্ন হইয়া যাইত ; শত্রুপক্ষের নারায়ণগড়ে প্রবেশ করা কষ্টসাধ্য হইয়া উঠিত। কিন্তু এক্ষণে উহার কোন চিহ্নই নাই । নারায়ণগড়ে ব্ৰহ্মাণী দেবীর একটী প্রাচীন মন্দির আছে। নারায়ণগড় রাজবংশের আদিপুরুব গন্ধৰ্ব্ব পাল ব্ৰহ্মাণী দেবীর প্রতিষ্ঠাতা । এক সময়ে এ প্রদেশে এই দেবীর অসীম প্রভাব ছিল। জগন্নাথ যাত্রীকে ইহঁার চরণে প্রণামীর টাকা প্রদান পূৰ্ব্বক ব্ৰহ্মাণীর ছাপ ( মুদ্র বিশেষ ) গ্রহণ করিয়া তবে পুরী প্রবিষ্ট হইতে হইত। নারায়ণগড়ের রাজাদিগের আমলে ইহঁার সেবার জন্য প্রতি বৎসর অসংখ্য ছাগ, মেষ ও মহিষের জীবন উৎসর্গীকৃত হইত। কিন্তু এখন আর সেদিন নাই ! রাজবংশের অবস্থা বিপৰ্য্যয়ের সঙ্গে তাহার সে অসীম প্রভাবও অতীতের গর্ভে বিলীন হইয়া গিয়াছে। এইরূপ জনশ্রুতি, যেদিন ভগবতী ব্ৰহ্মাণী এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হন সেদিন মন্দিরাভ্যস্তরে বে স্বত প্রদীপ প্ৰজলিত হইয়াছিল তাহা ছয় শত বৎসর সমভাবে আলোক দান করিয়াছে, এক মুহূৰ্ত্তের জন্যও নিৰ্ব্বাপিত হয় নাই। কিন্তু এই রাজবংশের শেষ রাজা পৃদ্ধিৰঞ্জভের জীবন-দ্বীপ নিৰ্ব্বাণের সঙ্গে সঙ্গে বিগত ১২৯০ সালে সে চির প্রজ্বলিত আলোকও অকস্মাৎ নিৰ্ব্বাপিত হইয়া গিয়াছে। ব্ৰহ্মাণী এখন ভিখারিণী। অন্তের অনুগ্রহের উপর নির্ভর করিয়া তাহার সেবাদি ব্ৰহ্মাণী দেবী ।