বেশী পরিবর্ত্তন সংসাধিত হইয়াছে দেখা যায়। খৃষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে অঙ্কিত রেনেলের মানচিত্রে রূপনারায়ণ নদীর নাম আছে; কিন্তু তৎপূর্ব্বে এই নদী ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। গাশতল্ডির ১৫৬১ খৃষ্টাব্দের মানচিত্রে ও ১৫৫৩ হইতে ১৬১৩ খৃষ্টাব্দের মধ্যে অঙ্কিত ডিব্যারোর মানচিত্রে এই নদী গঙ্গানামে উল্লিখিত হইয়াছে।[১] ১৬৬০ খৃষ্টাব্দে অঙ্কিত ভ্যানডেন ব্রুকের মানচিত্রে ভাগীরথীর পশ্চিমদিকের কোন নদীর নাম লিখিত হয় নাই। ঐ সকল নদী পর্য্যায়ক্রমে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ইত্যাদি সংখ্যাদ্বারা চিহ্নিত করা হইয়াছে। সেই নির্দ্দেশমত রূপনারায়ণ ও সুবর্ণরেখা যথাক্রমে ৩য় ও ৪র্থ নদী নামে উল্লিখিত হইয়াছে।[২] তৎপরে এই নদীটি ১৬৭০ খৃষ্টাব্দে অঙ্কিত ভ্যালেণ্টিনের মানচিত্রে পাথর-ঘাটা, ১৬৮৭ খৃষ্টাব্দের বাউরীর মানচিত্রে তমালী এবং ১৭০০ খৃষ্টাব্দের অঙ্কিত নাবিকদিগের মানচিত্রে তাম্বলী, তাম্বরলী, তাম্বরলীণ প্রভৃতি নামে পরিচিত ছিল দেখা যায়।[৩] ভ্যালেণ্টিনের মানচিত্রে দেখা যায় যে, তৎকালে দামোদরনদের দুইটি শাখার একটি তমলুকের দক্ষিণে রূপনারায়ণ নদের সহিত মিলিত ছিল এবং অন্যটি পূর্ব্বাভিমুখীন হইয়া কালনার নিকট ভাগীরথীর সহিত সংযুক্ত হইয়াছিল। আমাদের মনে হয়, এই সংযোগ থাকার দরুণই বৈদেশিক নাবিকগণের নিকট তৎকালে এই নদীটি ভাগীরথীর শাখানদী বলিয়া অনুমিত হওয়াতে তাঁহারা ইহাকেও গঙ্গানামে অভিহিত করিয়াছিলেন। পরবর্ত্তিকালের নাবিকগণ এই নদীর তীরবর্ত্তী তাম্রলিপ্ত বা তমলুক নগরের নামানুসারে এই নদীকে তমালী, তাম্বলী প্রভৃতি নামে
পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৫০
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩২
মেদিনীপুরের ইতিহাস।