পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৪
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

দ্বীপ যথাক্রমে খাজুরী দ্বীপ ও হিজলী দ্বীপ নামে অভিহিত হইয়াছিল। ইহাদের কথা কোম্পানীর সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর অনেক কাগজপত্রে উল্লিখিত আছে। তৎকালে এই দুইটি দ্বীপের মধ্য দিয়া কাউখালী নদী নামে একটি নদী প্রবাহিত হইত। এক্ষণে উহার অস্তিত্ব নাই। ঐ নদীটি বিলুপ্ত হইয়া যাওয়ায় খাজুরী ও হিজলী দ্বীপ দুইটি একসঙ্গে মিলিয়া গিয়া এক্ষণে মেদিনীপুর জেলার ভূখণ্ডের সহিত সংযুক্ত হইয়া রহিয়াছে।[১]

 মেদিনীপুর জেলার ভূমি-প্রকৃতি যেরূপ দ্বিবিধ, ইহার জল-বায়ুও সেইরূপ দুইপ্রকার। সাধারণতঃ দেখা যায় যে, ঘাটাল মহকুমার এবং জল-বায়ু ও স্বাস্থ্য।মেদিনীপুর সদর মহকুমার কতকাংশের জল-বায়ু বিশেষ অস্বাস্থ্যকর; কিন্তু তমলুক ও কাঁথি-মহকুমার এবং সদর মহকুমার অন্তর্গত জঙ্গল-মহালের জল-বায়ু বিশেষ স্বাস্থ্যকর। পরন্তু চিরদিন এরূপ ছিল না। প্রায় অর্দ্ধ-শতাব্দী পূর্ব্বে তমলুক ও কাঁথি মহকুমার অধিকাংশ স্থানের জল-বায়ু মন্দ ছিল এবং অন্যপক্ষে ঘাটাল ও মেদিনীপুর সদর মহকুমার জল-বায়ু বিশেষ স্বাস্থ্যকর ছিল। ম্যালেরিয়ার প্রবল প্রকোপে একদিকে যেমন এই অঞ্চল ভয়ানক অস্বাস্থ্যকর হইয়াছে, সেইরূপ কাঁথি ও তমলুকের লবণ-ব্যবসা উঠিয়া যাওয়ায় ঐ অঞ্চলের জল-বায়ুরও হীনাবস্থা তিরোহিত হইয়াছে। লবণ-ব্যবসা দ্বারা জল ও বায়ু উভয়ই বিদূষিত হইত।

 মেদিনীপুর জেলায় শৈল-মালা নিবিড় অরণ্য, সুবৃহৎ নদ-নদীপশু, পক্ষী, সরীসৃপাদি। ও মহাসমুদ্র প্রভৃতি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের সকল নিদর্শনই বর্ত্তমান থাকায় এই জেলায় নানাপ্রকার পশু, পক্ষী, সরীসৃপ ও মৎস্যাদি দেখিতে পাওয়া


  1. District Gazetteer p. 9.