পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভৌমিক বিবরণ।
৩৭

 বাঙ্গালার শস্যের মধ্যে ধান্যই প্রধান। এই জেলার দোফসলী জমী সমেত মোট আবাদী ২০,৪১,৫৫১ একার জমির মধ্যে ১৮,১৯,৮৯৪ একার জমিতে কেবল ধান্যই উৎপন্ন হইয়া থাকে। অন্যান্য ফসল অবশিষ্ট ২,১২,৬৫৭ একর জমিতে উৎপন্ন হয়। ধান্যোৎপত্তির পরিমান হিসাবে বাঙ্গালার জেলাগুলি বিন্যাস করিলে মেদিনীপুর প্রথম স্থান অধিকার করে। ময়মনসিংহ ও বাখরগঞ্জের স্থান যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয়।[১] কিন্তু তাহা হইলেও পৃথিবীর অন্যান্য যে সকল দেশে ধান্য উৎপন্ন হইয়া থাকে, ঐ সকল দেশের উৎপন্ন ফসলের সহিত তুলনা করিলে দেখা যায় যে, মেদিনীপুরে অতি সামান্য ধান্যই উৎপন্ন হয়। প্রতি একারে স্পেন দেশে ৭১ / মণ, ইটালীতে ৪১ / মণ, মিসর দেশে ৪১ মণ, জাপানে ২৬ / মণ এবং আমেরিকার যুক্তরাজ্যে ২৫ মণ করিয়া ধান্য উৎপন্ন হয়।[২] কিন্তু মেদিনীপুরে মাত্র ১৬ মণ। সমগ্র ভারতবর্ষে ধান্যোৎপত্তির গড়পরতা পরিমাণ প্রতি একারে প্রায় ২০ মণ। সমগ্র ভারতে অনূন্য দশ হাজার রকম আমন ধান্য আছে। বাঙ্গালা দেশেই প্রায় চারি হাজার প্রকার দৃষ্ট হয়। আউশ ধান্য যে কত প্রকার আছে, তাহা নির্ণয় করা সুকঠিন।[৩] মেদিনীপুর জেলায় নিম্নলিখিত নামে ৩০।৩২ রকমের আমন ধান্য এবং ১৫।১৬ রকমের আউশ ধান্য সচরাচর দেখিতে পাওয়া যায়।

 আমন ধান্য:—গেরিকাজল, লোন, হেমতা, রামশাল, দ্রৌপদীশাল, কলমকাঠি, কালিন্দী, রঙ্গিকয়াল, জামাইগাড়ু, গয়াবালি,


  1. Agricultural Statistics of Bengal 1914-15. p. 6.
  2. Bulletin of Agricultural Statistics of the International Institute of Agriculture, Rome, March 1914.
  3. কৃষক, ফাল্গুন ও চৈত্র ১৩২৩।