পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

সুন্দর এবং আস্বাদও সুস্বাদু। বাঁশ, বেত, নল, শর, খড়ি, হোগলা প্রভৃতি গৃহনির্ম্মাণোপযোগী শরঞ্জামীও এই জেলায় যথেষ্ট পরিমাণে উৎপন্ন হইয়া থাকে। এই জেলার জঙ্গল-মহালে শাল, পিয়াশাল, মহল, কুসুম, পলাশ প্রভৃতি মূল্যবান‍্ বৃক্ষও জন্মিয় থাকে। পূর্ব্বে জঙ্গল-মহালে এই সকল কাষ্ঠ অপর্য্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাইত; কিন্তু বেঙ্গল-নাগপুর রেলপথ প্রস্তুত হওয়ার পর হইতে বৎসর বৎসর জঙ্গল কাটাইয়া ঐ সকল কাষ্ঠ বিক্রীত হইয়া যাওয়াতে মেদিনীপুরে সেগুলি ক্রমশঃ দুষ্প্রাপ্য হইয়া উঠিয়াছে।

 মেদিনীপুর জেলার মোট পরিমাণ-ফল ৫,১৮৬ বর্গ-মাইল।[১] ইহার আয়তন ইংলণ্ডের দশ ভাগের এক ভাগ, স্কটল্যাণ্ড অথবা আর্ল্যাণ্ডের ছয় জেলার আয়তন। অংশের একাংশ, ডেনমার্ক অথবা সুইজারল্যাণ্ডের এক-তৃতীয়াংশ এবং বেলজিয়ামের অর্দ্ধেকের সমান। ইউরোপের তুরস্ক অথবা ওয়েল‍্স‍্ মেদিনীপুর জেলার চেয়ে অল্পই বড়। মণ্টেনিগ্রোর ও মেদিনীপুর জেলার আয়তন প্রায় সমান। বঙ্গদেশের অন্তর্গত জেলাগুলির তুলনায় ময়মনসিংহ জেলা প্রথম এবং মেদিনীপুর জেলা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করিয়াছে। ২৪ পরগণা, হুগলী, হাওড়া ও বগুড়া এই চারিটি জেলার মোট আয়তন মেদিনীপুর জেলার আয়তনের প্রায় সমান।

 রাজ্যশাসন ও রাজস্ব সম্পর্কীয় নানাপ্রকার কার্য্যের সুবিধার জন্য মহকুমা ও থানা বিভাগ। এই জেলাকে মেদিনীপুর-সদর, কাঁথি, তমলুক ও ঘাটাল নামে চারিটি উপবিভাগ বা মহকুমায় এবং নিম্নলিখিত ২৬টি থানায় বিভক্ত করা হইয়াছে।


  1. ১৯১১ খৃ: অব্দের সেন্সাস রিপোট হইতে এই সংখ্যা গ্রহণ করা হইয়াছে। কিন্তু সম্প্রতি মেদিনী জেলার জরিপ, জমাবন্দি হইবার পর ইহার কিছু কিছু পরিবর্ত্তন হইয়াছে দেখা যায়।