সুন্দর এবং আস্বাদও সুস্বাদু। বাঁশ, বেত, নল, শর, খড়ি, হোগলা প্রভৃতি গৃহনির্ম্মাণোপযোগী শরঞ্জামীও এই জেলায় যথেষ্ট পরিমাণে উৎপন্ন হইয়া থাকে। এই জেলার জঙ্গল-মহালে শাল, পিয়াশাল, মহল, কুসুম, পলাশ প্রভৃতি মূল্যবান্ বৃক্ষও জন্মিয় থাকে। পূর্ব্বে জঙ্গল-মহালে এই সকল কাষ্ঠ অপর্য্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাইত; কিন্তু বেঙ্গল-নাগপুর রেলপথ প্রস্তুত হওয়ার পর হইতে বৎসর বৎসর জঙ্গল কাটাইয়া ঐ সকল কাষ্ঠ বিক্রীত হইয়া যাওয়াতে মেদিনীপুরে সেগুলি ক্রমশঃ দুষ্প্রাপ্য হইয়া উঠিয়াছে।
মেদিনীপুর জেলার মোট পরিমাণ-ফল ৫,১৮৬ বর্গ-মাইল।[১] ইহার আয়তন ইংলণ্ডের দশ ভাগের এক ভাগ, স্কটল্যাণ্ড অথবা আর্ল্যাণ্ডের ছয় জেলার আয়তন। অংশের একাংশ, ডেনমার্ক অথবা সুইজারল্যাণ্ডের এক-তৃতীয়াংশ এবং বেলজিয়ামের অর্দ্ধেকের সমান। ইউরোপের তুরস্ক অথবা ওয়েল্স্ মেদিনীপুর জেলার চেয়ে অল্পই বড়। মণ্টেনিগ্রোর ও মেদিনীপুর জেলার আয়তন প্রায় সমান। বঙ্গদেশের অন্তর্গত জেলাগুলির তুলনায় ময়মনসিংহ জেলা প্রথম এবং মেদিনীপুর জেলা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করিয়াছে। ২৪ পরগণা, হুগলী, হাওড়া ও বগুড়া এই চারিটি জেলার মোট আয়তন মেদিনীপুর জেলার আয়তনের প্রায় সমান।
রাজ্যশাসন ও রাজস্ব সম্পর্কীয় নানাপ্রকার কার্য্যের সুবিধার জন্য মহকুমা ও থানা বিভাগ। এই জেলাকে মেদিনীপুর-সদর, কাঁথি, তমলুক ও ঘাটাল নামে চারিটি উপবিভাগ বা মহকুমায় এবং নিম্নলিখিত ২৬টি থানায় বিভক্ত করা হইয়াছে।
- ↑ ১৯১১ খৃ: অব্দের সেন্সাস রিপোট হইতে এই সংখ্যা গ্রহণ করা হইয়াছে। কিন্তু সম্প্রতি মেদিনী জেলার জরিপ, জমাবন্দি হইবার পর ইহার কিছু কিছু পরিবর্ত্তন হইয়াছে দেখা যায়।