পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

মেদিনীপুরের জঙ্গল মহালে গাল, মধু, ধূনা, তসরগুটী, পশুচর্ম্ম, হরিনের শিং, নানাপ্রকার জন্তুর হাড়, পাখীর পালক ইত্যাদি দ্রব্য প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। মেদিনীপুর সদর মহকুমার বিলাত-মহাল জঙ্গলশূন্ত, সমস্তই কৃষ্ট ভূমি।

 মেদিনীপুর জেলার প্রধান নগরের নাম মেদিনীপুর। ১৭৮৩ মেদিনীপুর শহর। খৃষ্টাব্দের ২২ শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর সহর মেদিনীপুর জেলার প্রধান নগর বলিয়া ঘোষিত হইয়াছে। ইহা কংসাবতী নদীর তীরে অবস্থিত। অক্ষাংশ ২২°২৫'২৩” উত্তর এবং দ্রাঘিমাংশ ৮৭°২১'৪৫” পূর্ব্ব। মেদিনীপুর নগরীর সীমা-বিবরণ সম্বন্ধে নিম্নলিখিত কবিতাটি প্রচলিত আছে।—

“আবসবাটী যৎ উত্তরস্তাম্
গোপশ্চ যৎ পশ্চিমদিগ্বিভাগে।
কংসাবতী ধাবতি দক্ষিণে চ
সা মেদিনীনাম পুরী শুভেয়ম্॥”

 মেদিনীপুর কতদিনের নগর, তাহা এক্ষণে সঠিক জানিবার উপায় নাই। আইন-ই-আক‍্‍বরীতে জলেশ্বরের মধ্যে মেদিনীপুর একটি সুবৃহৎ নগর বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে। প্রাচীন বৈষ্ণব কবি গোবিন্দ দাসের কড়চা হইতে জানা যায় যে, চৈতন্যদেব ১৫০৯ খৃষ্টাব্দে এই সহরের মধ্য দিয়া শ্রীক্ষেত্রে গমন করিয়াছিলেন।[১] ইহার পূর্ব্বের মেদিনীপুর সহরের আর কোন সন্ধান এত দিন পাওয়া যায় নাই। সম্প্রতি মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় শিখর ভূমির রাজা রামচন্দ্র-কৃত একখানি প্রাচীন সংস্কৃত পুঁথি আবিষ্কার করিয়াছেন। উহার এক স্থানে আছে:—


  1. জয়গোপাল গোস্বামি-সম্পাদিত গোবিন্দ দাসের কড়চা পৃঃ ২৮-২৯।