পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
নাটাই

নূতন গিন্নি ভাবলেন, হা অদেষ্ট, এ অভাগীর পেটে হয়েছে ব’লেই আমার বাছাদের এত হতাদর। এক বাড়ীতে চারিটী ভাই বােন্; তারা যদি সকলে সমান না হবে তবে লােকে আমাকে ওদের সকলকেই নিজের পেটের ছেলের মতন দেখতে বলে কেন?

 একদিন গিন্নি এসে ধনপতিকে বল্লেন, কেবল বাড়ীতে বসে থাকলে তাে আর সংসার চলবে না। শুনছি, সব সওদাগরের বিদেশে বণিজ্যে যাচ্ছে; তুমিও তাদের সঙ্গে যাও না কেন? ছেলে মেয়ে কোলে ক’রে বসে থাকা পুরুষ মানুষের কাজ নয়। তাই শুনে, ধনপতির ভাবনা বেড়ে গেল। কারণ, নূতন গিন্নি যে, বাড়ীতে খাবার এলে, লুকিয়ে আম সন্দেশ নিজের ছেলে মেয়েদের হাতে এক একটী বেশী দিতেন, তাহা তাঁর জানবার বাকী ছিল না। এজন্য বিদেশে যেতে হবে ভেবে, বড় ছেলে ও বড় মেয়েটার জন্যে তাঁর প্রাণ কাঁদতে লাগলাে। কিন্তু বিদেশে না গেলেও তাে নয়; আগে রােজগার, তার পরে সব।

 সাত পাঁচ ভেবে, ধনপতি বিদেশে যাওয়াই স্থির করলেন। যাবার আগে গােপনে মুদী, গয়লা, মেঠাইওয়ালা ও সব দোকানীদের কাছে গিয়ে বল্লেন, ভাই তােমরা আমার বড় ছেলে মেয়েদের দেখো। তারা যা চাইবে তাই দেবে, তাতে কোন আপত্তি করাে না, আমি ফিরে এসেই হিসেব চুকিয়ে দেব। এই ব’লে তাদের হাতে কিছু আগাম টাকা গুঁজে দিলেন।

 ছেলেটী বল্লে, বাবা তুমি কোথা যাবে, আমার জন্যে হীরের আংটি আনবে। মেয়েটী বল্লে, বাবা আমার জন্যে তবে মুক্তোর হার চাই। ধনপতি তাদের একত্র কোলে তুলে নিয়ে ছেলেকে