পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধনপতি সওদাগর
৮৯

আদর করে বল্লেন, তােমার জন্যে রাঙা বউ আনবো। অমনি মেয়েটা বল্লে, তবে বাবা আমার জন্যে টুকটুকে বর নিয়ে এসাে। ধনপতি চো’কের জলের সঙ্গে হেঁসে ছেলে মেয়েদের মুখ চুম্বন ক’রে কোল হতে নামিয়ে দিয়ে, মা চণ্ডীর নাম স্মরণ ক’রে নােকায় উঠে বিদেশ যাত্রা করলেন।

 সওদাগর-গিন্নি ভাবলেন, বড় ছেলেটা ও বড় মেয়েটার এত বাড়াবাড়ি ভাল নয়। ওরা সাজগােজ করে বাড়ীতে বসে থাকলে আমার বাছাদের আদর যত্ন হবে না। বাড়ীর রাখাল ছোঁড়াটার পেছনে কম খরচ হয় না। এই ভেবে, রাখালকে তাড়িয়ে দিয়ে তিনি তাদের ছাগল ও ভেড়া চরাতে দিলেন। দুই ভাই বােন্ ভােরে উঠে মাঠে যেতো, আর সন্ধ্যে বেলায় বাড়ী এসে দু’মুঠা ভাত খেতো।

 গিন্নির ভাবনা গেল না। আধ-পেটা খেয়েও সতীনের ছেলে মেয়ে হেসে খেলে বেড়াচ্ছে, আর আমার ছেলে মেয়েদের রােজ দু’বেলা ঘি দুধ খেতে দি, তবু বাছার কেমন রােগা হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে! একদিন ছােট ছেলে ও মেয়ে বল্লে, মা আমরা দাদা ও দিদির সঙ্গে মাঠে বেড়াতে যাবো। মা বল্লেন, ষাট, তােরা কেন এই রোদে ওই হতচ্ছাড়াদের সঙ্গে গিয়ে খিদেয় কষ্ট পাবি। যা, ঘরে বসে খেলা করগে। তারা বল্লে, না মা আমাদের কোন কষ্ট হবে না; তুমি ব্যস্ত হয়াে না, আমরা বরং শীগগির বাড়ী ফিরে আসবে। এই ব’লে তারাও ওদের সঙ্গে ছাগল ভেড়া চরাতে গেল।

 দুপুর চলে গেল, বিকেল হলো; তবু ছেলেরা বাড়ী এল না। বিলম্ব দেখে সওদাগর-গিন্নি নিজের ছেলে ও মেয়ের