পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
নাটাই

জন্যে ব্যস্ত হয়ে বাড়ীর চা’দ্দিক ছুটোছুটি কোরছিলেন। কেন বাছাদের আজ ওই হতভাগা দুটার সঙ্গে যেতে দিলুম। সারাদিন না খেয়ে দেয়ে বাছাদের মুখ না জানি কেমন শুকিয়ে গেছে। এই ভেবে তিনি তাদের জন্যে মুড়কি, চিড়ে ভাজা। লাড়ু, বাতাসা হাতে ক’রে ব্যাকুল হয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পথের পানে চেয়ে রইলেন। এমন সময় সন্ধ্যার কিছু আগে, চা’র ভাইবোন বাড়ী ফিরে এলো। ছোট ছেলে ও মেয়ে দৌড়ে এসে বল্লে, মা, তোমার হাতের খাবারগুলো ফেলে দাও, আমরা ওসব আর কখনো খাব না। দাদা ও দিদির সঙ্গে গিয়ে আজ পেট পুরে যা খেয়েছি, এমন জিনিষ ঘরে কোন দিন চো’কেও দেখিনি। আজ দুপুর বেলা বাজারে দোকানীরা দাদা ও দিদিকে আদর ক’রে কত জিনিষ খেতে দিয়েছে তা আর কি বলবো। দই দুধ ক্ষীর সর তো ছিলই, তা ছাড়া সন্দেশ, রসগোল্লা, পানতোয়া জিলিপি, অমৃতি, ‘লালমোহন’, ‘ক্ষীরমোহন’ আর কত যে খেয়েছি তার সব নাম আমরা জানিও না। দাদা ও দিদির একটা পয়সা দিতে হলো না। তারা রোজ এই সব খায়; আমরা রোজ তাদের সঙ্গে যাবো, তোমার মানা শুনবো না।

 তাই শুনে গিন্নি গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলেন। তিনি সব বুঝতে পারলেন। সেদিন রাত্রে তাঁর ঘুম হলো না। খুব ভোরে উঠে তিনি দোকানীদের ডাকিয়ে বল্লেন, দেখ, আমার বড় ছেলে ও বড় মেয়েকে তোমরা জল খাবার ও জিনিষপত্র ধারে দিচ্ছ, তা ভালোই। আমার পেটের ছেলে মেয়ে যেমন, তারাও তেমন। তবে, একটা কথা তোমাদের জেনে রাখা