পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
নাটাই

নিয়ে এসেছি। এই ব’লে ছােট মেয়ে একটী সুন্দর টুকটুকে লাল ফল মা’র হাতে দিলে।

 গিন্নি আশ্চর্য হয়ে দেখলেন, ‘অমৃত ফল’ বা আমও নয়, একেবারে ‘মােক্ষ ফল’! তিনি মাথায় হাত দিয়ে একেবারে বসে পড়লেন। হা অদেষ্ট, যে ফল দেবতার ভােগর জন্যে সৃষ্টি হয়েছে, তা খেতে এই পৃথিবীর ভিতর আর লােক ছিল না! রাজা মহারাজারা খেলে না, আমার ছেলে মেয়েরা খেলে না, আমিও খেলুম না, আর খেলে কি-না আমার সতীনের ছেলে মেয়েরা! হা বিধাতা, আমার মনে কষ্ট দিয়ে তােমার আশ মিটে না! সে দিন রাত্রে গিন্নির ঘুম হলো না। মনে দারুণ রাগ হলাে। রাত্রি পােহাইবার অপেক্ষায় জ্বরো রােগীর ন্যায় ছট্‌ফট্‌ করতে লাগলেন। খুব ভােরে উঠে, মুড় খ্যাংড়া হাতে নিয়ে দৌড়ে বনের ভিতর গেলেন। ‘মােক্ষ ফলের’ প্রতি ঝাঁটা উত্তোলন ও আস্ফালন ক’রে অভিশাপ দিলেন, পুর্ব্বদিকে সূর্য্য ঠাকুর তুমি সাক্ষী, যদি আমি সতী মায়ের গর্ভে জন্মলাভ করে থাকি, যদি আমার উর্দ্ধকুলে কেউ সতী থাকে, তবে পৃথিবীতে এই ফল সকলের অভক্ষ্য হউক, বাহিরে যেমন আছে তেমনি থাক্‌, ভিতর ভুস্মবৎ হউক। সতীত্বের অভিসম্পাত সফল হলো। সেই অবধি মােক্ষফল পৃথিবীতে ‘মাকাল ফল’ নামে পরিচিত হলাে।

 তার পর আবার অনেক দিন চ’লে গেল। কিন্তু সপত্নী সন্তানদের শ্রীবৃদ্ধি ও সওদাগর-গৃহিণীর মুনোকষ্ট কিছুতেই দুর হলো না। আবারও তিনি নিজের ছেলে মেয়েদের গােয়েন্দা ক’রে জানতে পারলেন তারা এখন আর কিছু না পেয়ে গৃহস্থদের