পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধনপতি সওদাগর
৯৫

ঠাকুরাণি! আর আমাদের কষ্ট দিও না, কা’ল যেন ছাগল ও ভেড়া খুঁজে পাই। নইলে মা’র কাছে আমরা আর মুখ দেখাতে পারবো না। তাই শুনে সকলে হেসে বল্লেন, এ কি রকম বর চাওয়া হলো! তাঁরা মেয়েটীর দিকে তাকিয়ে বল্লেন, যদি বর চাইতে হয় তবে (বিয়ের) বরই চাও। তোমরা দু’জনে এই বর মাগ, ভেয়ের জন্যে বৌ আর বোনের জন্যে বর সঙ্গে করে বিদেশ থেকে বাপ শীগ্‌গির ফিরে আসুন।

 রাত্রে আহারের পর বাড়ীর মেয়েরা বল্লেন, নাটাই ঠাক্‌রুণের আশীর্ব্বাদে কা’ল তোমাদের নিশ্চয়ই সুপ্রভাত হবে। আমরা গরীব মানুষ, তোমাদের জন্যে তাড়াতাড়ি বেশী রকম খাবার আয়োজন করতে পাল্লেম না; আমাদের ত্রুটী গ্রহণ করো না। সওদাগরের ছেলে ও মেয়ে বল্লে, আজ অসময়ে পড়ে তোমাদের নুন খেয়েছি, চিরকাল তোমাদের গুণ ও নাটাই ব্রতের কথা মনে থাকবে।

 পরদিন ভোরে উঠে সকলে দেখলেন, ছাগল ও ভেড়া ঘরের পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর তখনি খবর পাওয়া গেল দেশের সওদাগরদের অনেক নৌকা বিদেশ থেকে বাড়ী আসছে। তাই শুনে ছাগল ও ভেড়া রেখে দুই ভাই বোন নদী তীরে ছুটে গেল। এক খানির পর আর এক খানি ক’রে অনেকগুলি সুন্দর পণ্য-বোঝাই নৌকা গুন টেনে ধীরে ধীরে গ্রামের দিকে আসছিল। তারা একে একে সব নৌকার মাঝিদের ডেকে, জিজ্ঞেস কল্লে, ধনপতি সওদাগরের নৌকা কোথায়? কেউ বল্লে, দশ নৌকার পর; আবার কেউ বল্লে, পাঁচ নৌকার পর। তার পর ধনপতি সওদাগরের নৌকা এসে পঁহুছিল।