পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
নাটাই

 অনেক বছর পর ধনপতি দেশে ফিরে আসছেন। বাড়ীর জন্যে তাঁর মন ব্যাকুল হয়েছে। ছেলে মেয়েরা কেমন আছে, তাদের এখন কত বড় দেখাবে, অনেক দিন তাঁকে না দেখে গিন্নির স্বভাব এখন অবিশ্যি বদলে গেছে, এইরূপ অনেক কথা তাঁহার মনে উদয় হইতেছিল। নৌকার ভিতর থেকে মুখ বাড়িয়ে তিনি পরিচিত রাস্তাঘাট, গাছপালা, বাড়ীঘর ইত্যাদি দেখে আনন্দ উপভােগ করছিলেন। আবার কোন স্থানে নূতন শ্মশান চিহ্ন দেখে তাঁর মন কেঁপে উঠছিল। এইরূপে যেতে যেতে, কতকদুরে তিনি নিজের ছেলে মেয়েদের দেখে, অমনি নৌকা হ’তে লাফ দিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে তাদের বুকে জড়িয়ে ধরলেন।

 ধনপতির সঙ্গে আরও তিন চার খানি নৌকা ছিল। তিনি বিদেশ থেকে অনেক ধনরত্ন সঙ্গে এনেছেন। নৌকার ভিতরে এনে তিনি ছেলেকে হীরের আংটি ও মেয়েকে গজমুক্তোর হার পরিয়ে তাদের মুখ চুম্বন ক’রে বল্লেন, তােমাদের জন্যে এর চেয়ে আরও সুন্দর জিনিষ এনেছি। তারা অমনি আগ্রহ করে জিজ্ঞেস কল্পে, আর কি এনেছ বাবা? সওদাগর আদর করে বল্লেন, তােমার জন্যে রাঙা বউ, আর তােমার জন্যে টুকটুকে বর! তাই শুনেন দু’ভাই বােন লজ্জায় অবনত হলো। এখন তারা একটু বড় হয়েছে!

 এদিকে বাড়ীতে সওদাগর গিন্নি ভাবছেন, সতীনের ছেলেরা গেল কোথায়? ছাগল ভেড়া ও ফিরে এল না! নিশ্চয়ই তারা ফল খুঁজতে গিয়ে বনের ভিতর বাঘ ভালুকের হাতে মারা পড়েছে। আহা, যদি বেঁচে থাকতো তবে ওদের দিয়ে সংসারের