পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধনপতি সওদাগর
৯৭

কত কাজকর্ম্ম হতে পারত! এই বলে তিনি নিজের ছেলে মেয়েদের ডেকে খুব সাবধান ক’রে দিলেন, গ্রামে বাঘের ভয়, তোমরা কখনো ঘরের বাইরে যেও না।

 ধনপতির নৌকা ঘাটে এসে পঁহুছিল। খবর পেয়ে, গিন্নি গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলেন। সওদাগর যে বিদেশ থেকে বিনা সংবাদে সুস্থ শরীরে হঠাৎ বাড়ী আসবেন, তার জন্যে তিনি তখন প্রস্তুত ছিলেন না। বড় ছেলে মেয়েদের না দেখে তিনি কি মনে করবেন, আর আমিই বা কি বলি! আর সময় নাই; গিন্নি তখনি ধুলায় পড়ে চেচিয়ে কাঁদতে লাগলেন। আমার কি হলো গো! আমি কেন বাছাদের যেতে দিলুম। আমি কত বল্লুম, গাঁয়ে বাঘ এসেছে, চা’র ভাই বোন ঘরে বসে একত্র খেলা কর। আমার কথা কিছুতেই শুনলে না গো! আমার এরাও যেমন তারাও তেমন ছিল; পেটের ছেলের মতন দু’জনে আমায় কত ভক্তি করতো! আমার কত সাধ ছিল, বড় দু’ ছেলে মেয়ের এ বছরই বিয়ে দেবো; বিদেশ থেকে সওদাগর এসে নাতি নাতনী দেখে কত সুখী হবেন! আমার সব সাধ দূর হলো গো! আমার এখন বেঁচে থেকে লাভ কি; আমায় বিষ এনে দাও, আমি আজই মরবো। আমার এ শোক সহ্য হয় না!

 গিন্নির মায়াকান্না শুনে ধনপতির বড় রাগ হলো। তিনি রাগ গোপন করে স্ত্রীর কাছে এসে সান্ত্বনার ছলে বল্লেন, যা হবার তা হয়েছে, আর মিছে শোক ক’রে ফল কি। আমার এই আফিমের কৌটটি তোমার বাক্সে রেখে দাও। ছেলেপুলের ঘর, সাবধান! এটা বিষ। বিষের কথা শুনে গিন্নির বড়